যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি ও কেনটাকি অঙ্গরাজ্যে প্রবল ঝড় ও টর্নেডোর তাণ্ডবে অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। শনিবার সিনএনএন, ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার কেনটাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেসহিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে আঘাত হানা ঝড়ে অন্তত ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
অন্যদিকে মিসৌরিতে অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বিভিন্ন ভবনে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধারে সেখানে তল্লাশি অভিযান চলছে।
কেনটাকির লরেল কাউন্টিতে শুক্রবার রাতের দিকে টর্নেডোর আঘাতে বহু মানুষ গুরুতর আহত হন। শেরিফ জন রুটের দপ্তর জানিয়েছে, বিধ্বস্ত এলাকায় এখনো উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
মিসৌরির সেন্ট লুইস শহরের মেয়র কারা স্পেন্সার নিশ্চিত করেছেন, শুধু তার শহরেই পাঁচজন নিহত হয়েছেন এবং ৫,০০০-এরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের শহর আজ গভীর শোকে আচ্ছন্ন। এই প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ সত্যিই ভয়াবহ’।
এদিকে সেন্ট লুইস থেকে প্রায় ১৩০ মাইল দক্ষিণে স্কট কাউন্টিতে আরও একটি টর্নেডো আঘাত হানে বলে জানা গেছে। সেখানে দু’জন নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হন। বেশ কয়েকটি বাড়িও ধ্বংস হয়ে গেছে।
কাউন্টির শেরিফ ডেরিক হুইটলি জানান, ‘আমাদের উদ্ধারকর্মীরা ঝড় চলাকালীনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আহতদের সহায়তা করেছেন’।
এই ঝড়টি ছিল একটি বৃহৎ দুর্যোগময় আবহাওয়ার অংশ। যেটি শুক্রবার শুরু হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলজুড়ে বিস্তার লাভ করে। উইসকনসিনেও টর্নেডো আঘাত হানতে দেখা গেছে এবং গ্রেট লেকস অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন।
শুক্রবার রাতে শিকাগো অঞ্চলে ধূলিঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়। আবহাওয়া দপ্তর জানায়, শিকাগোর দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে ইন্ডিয়ানার উত্তরাংশ পর্যন্ত ১০০ মাইলজুড়ে ধুলোর একটি দেয়াল গঠিত হয়, যা দৃশ্যমানতা মারাত্মকভাবে কমিয়ে দেয়।
এদিকে টেক্সাসে শুরু হয়েছে প্রচণ্ড গরম। সান আন্তোনিও ও অস্টিন শহরে জারি করা হয়েছে গরমের সতর্কতা। তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। ভার্জিনিয়া থেকে ফ্লোরিডা পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলজুড়ে চলছে তাপপ্রবাহ।
অস্টিন ও সান আন্তোনিওর জন্য নিযুক্ত আবহাওয়াবিদ জেসন রানইয়েন বলেন, ‘আর্দ্রতার কারণে এই তাপমাত্রা আরও বেশি অনুভূত হবে। উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে গরমে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে’।
তিনি সবাইকে পর্যাপ্ত পানি পান ও পর্যাপ্ত বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন।