ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরাইল অধিকৃত কেন্দ্রীয় অঞ্চলে, বিশেষ করে তেলআবিবসহ বিভিন্ন শহরে সাইরেন বেজে ওঠে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সংবাদ সংস্থাগুলো। সেই সঙ্গে ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ইয়েমেনি সূত্রগুলো জানায়, রোববার দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে ছোঁড়া হয় এবং ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেগুলো প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়। এতে ভয়ে আতঙ্কে ইসরাইলের সাধারণ মানুষ বাঙ্কার বা আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যান।
এ ঘটনার পর তেলআবিবের বেনগুরিয়ন বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ স্থানীয় অধিবাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ গোষ্ঠীর তথ্য শাখার উপপ্রধান নাসরেদ্দিন আমের এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে জানান, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের জবাবে ইয়েমেন এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ইসরাইলি দখলকৃত ভূখণ্ডের সব বিমানবন্দর এখন অনিরাপদ। আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর উচিত ইসরাইলগামী ফ্লাইট এড়িয়ে চলা’।
নাসরেদ্দিন আমের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গাজায় হামলা বন্ধ না হলে এবং অবরোধ না তোলা হলে ইয়েমেনি সামরিক অভিযান আরও জোরালো ও ঘন ঘন হবে।
তার ভাষায়, ‘ইসরাইল আরব নেতাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। এখন তাদের সেই মূল্য দিতে হবে—এই বিস্ফোরণের শব্দ তারা নিজেদের দখলকৃত এলাকায় শুনতে পাবে’।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরাইলি অভিযানের শুরু থেকেই ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী গাজার প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরাইলি অধিকৃত অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে।
এদিকে, ইসরাইলি বাহিনী অবরুদ্ধ গাজায় বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। যাতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৩৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে আল-মাওয়াসির তথাকথিত ‘নিরাপদ অঞ্চলে’।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনীর তীব্র হামলার ফলে উত্তর গাজার সমস্ত সরকারি হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে।
গাজায় নতুন করে স্থল আক্রমণের জন্য ইসরাইলের তৎপরতা এবং কাতারে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু হওয়ার সময় এই হামলাগুলো করা হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় ইসরাইলের অব্যাহত আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৫৩,৩৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,২১,০৩৪ জন আহত হয়েছেন।
তবে সরকারি মিডিয়া অফিস মৃতের সংখ্যা আপডেট করে ৬১,৭০০-এরও বেশি বলে জানিয়েছে। তাদের মতে, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষ মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।সূত্র: ইরনা ও আল-জাজিরা