শখ করে দম্পতি দানবাকৃতির ষাঁড়টির নাম দিয়েছেন ‘কালাচাঁন’। দেহের পুরোটাই কালো রঙে আচ্ছন্ন আর মাথায় সাদা মুকুট। দেখতে নাদুস-নুদুস হলেও চোখের চাওনিতে যেন আগুন ঝরে।
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, যত গর্জে তত বর্ষে না। সাড়ে চার বয়সি কালাচাঁনের বেলাও যেন তাই। যত রাগই উঠুক না কেন আম্বিয়া খাতুন হাত বুলিয়ে দিলে সঙ্গে সঙ্গে পানি হয়ে যায় সব রাগ। প্রায় ২০ মণ ওজনের কালাচাঁনকে খুব সহজেই পালন করে যাচ্ছেন আম্বিয়া খাতুন ও রেজাউল দম্পতি।
রেজাউল দম্পতি কালাচাঁনকে লালন-পালন করলেও তারা গরুটির আসল মালিক নয়। ষাঁড়টির আসল মালিক নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার খলিশাউর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের টানা পাঁচবারের ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন। তার বাড়ি পাবই গ্রামে। চার বছর আগে শখের বসে ৭৫ হাজার টাকায় ষাঁড় গরুটি কিনেন স্থানীয় বাজার থেকে। ষাঁড়টি কিনে লালন-পালন করতে দেন তার প্রতিবেশী ভাতিজা রেজাউলকে। পরে রেজাউল ও তার স্ত্রী যত্ন সহকারে গরুটিকে বড় করেছেন।
সরজমিনে রেজাউলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি ঘরে বেশ কয়েকটি গাভী ও একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বড় ষাঁড় দাঁড়িয়ে আছে। সেই ঘর পরিষ্কার করছেন আম্বিয়া খাতুন। একটু পরেই বৃষ্টি শুরু হলে সুঠামদেহী গরুটিকে বাহিরে নিয়ে যান তিনি। পরে বৃষ্টির পানিতেই গোসল করায় গরুটিকে।
রেজাউল বলেন, ‘আমি কালাচাঁনকে নিয়মিত যত্ন করি। আমার পাশাপাশি পরিবারের সবাই এর প্রতি খেয়াল রাখে। তাকে নিয়মিত গম, ভুষি, খৈল, মাসকলাই ডালসহ ১৫ কেজি পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়াই।’
কালাচাঁনের মালিক কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি আগে থেকে কৃষি কাজ করতাম। সঙ্গে গরু পালন করার একটা শখ ছিল। ১৯৯৭ সালে প্রথম ইউপি সদস্য হই। তারপরও আমি গরু পালন করি। এ কালাচাঁন আমার খুব পছন্দের একটি গরু। গত কুরবানির ঈদে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ মাঠে গরুটি নিয়েছিলাম। আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় সিদ্ধান্ত নেয়, আগামী ঈদে বিক্রি করবো। বাড়িতে অনেক পাইকার এসেছিল আমি বিক্রি করিনি। আমি কালাচাঁনের দাম চাচ্ছি ৮ লাখ টাকা।’