ইসরাইলের বিমান হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, বাঘেরি ইরানের আধাসামরিক বিপ্লবী গার্ডের একজন সাবেক শীর্ষ কমান্ডার ছিলেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রতিবেদনে এ বিষয়ে (হামলার) বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
মোহাম্মদ বাঘেরি কে?
মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি তেহরানে মোহাম্মদ-হোসেইন আফশোরদি নামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
তার জন্ম সাল নিয়ে পরস্পরবিরোধী তথ্য রয়েছে। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ বলছে, তিনি ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন, অন্যরা সালটি ১৯৫৮ বলে উল্লেখ করেছেন।
বাঘেরি ২০১৬ সাল থেকে ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক পদ সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সামরিক গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞ বাঘেরি ১৯৮০ সালে বিপ্লবী গার্ডে যোগ দেন এবং ১৯৮০-এর দশকের ইরান-ইরাক যুদ্ধে অংশ নেন।
শিক্ষাজীবনে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরে তারবিয়াত-ই মোদারেস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক ভূগোলে ডক্টরেট ডিগ্রি নেন।
বাঘেরিকে ২০১৬ সালের ২৮ জুন জেনারেল স্টাফের গোয়েন্দা ও অপারেশন বিভাগের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফের পদ থেকে সশস্ত্র বাহিনী জেনারেল স্টাফের (এএফজিএস) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়, হাসান ফিরোজাবাদীর স্থলাভিষিক্ত হন, যিনি দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে পদটিতে ছিলেন।
বাঘেরি মোহাম্মদ আলী জাফারি, আলী ফাদাভি এবং গোলাম আলী রশিদ সহ অন্যান্য কমান্ডারদের সাথে আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট (এইআই)-এর চিহ্নিত আইআরজিসি কমান্ড নেটওয়ার্কের অংশ ছিলেন।
এই দলটি ‘ইরানের সামরিক বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের উপর আধিপত্য বিস্তার করে এবং পরিকল্পনা, অভিযান, গোয়েন্দা তথ্য, গোপন এবং অনিয়মিত যুদ্ধ অভিযান এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ করে। ‘
বাঘেরির সামরিক তৎপরতা ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের সময় থেকেই শুরু। বাঘেরি দাবি করেন, তিনি যুদ্ধের সমস্ত বড় অপারেশনে ভূমিকা পালন করেছিলেন, কয়েকটি বাদে।
আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট (এইআই) অনুসারে, বাঘেরি ইরান-ইরাক যুদ্ধ পরিকল্পনার সিনিয়র সভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, এই বৈঠকগুলো বাঘেরিকে উদীয়মান সামরিক ও শাসকগোষ্ঠীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিচিত করার সুযোগ করে দিয়েছিল, যার মধ্যে কাসেম সোলাইমানিও ছিলেন, যিনি পরে আইআরজিসির কুদস ফোর্সের কমান্ডার হয়েছিলেন। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের বাগদাদে ড্রোন হামলায় সোলাইমানি নিহত হন।
তথ্যসূত্র: দ্য ইকোনোমিক টাইমস