চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ কার্যদিবস রোববার (৩০ জুন) দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর শেয়ারবাজারে দরপতন হলো। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের গতি।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের গতি।
গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলেও শেষ চার কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকে। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। সেইসঙ্গে ৩২ কার্যদিবসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেনের ঘটনা ঘটে।
টানা পাঁচ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। ফলে লেনদেনের শুরুর দিকেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৫ পয়েন্ট কমে যায়।
তবে লেনদেনের শেষদিকে বড় মূলধনের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় সূচকের পতনের মাত্রা কমে আসে। এমনকি এক পর্যায়ে সূচক পজেটিভও হয়ে যায়। তবে ৫ মিনিটের লেনদেনে সূচক ঋণাত্মক হয়েই লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৫টির। আর ৬৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৭২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১১৮টির দাম কমেছে এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৩৩টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪২টির দাম কমেছে এবং ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৪টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৫টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৯টির দাম কমেছে এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৩৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৫৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮১৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে ৪৬৪ কোটি ৫৩ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৯৪ কোটি ৩৪ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে অগ্নি সিস্টেম। কোম্পানিটির ২২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকার। ১৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ব্র্যাক ব্যাংক, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, বিচ হ্যাচারি, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স এবং ইন্টার্ন লুব্রিকেন্ট।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৫টির এবং ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা।