মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের দরিশলই ও ফুলবাড়ি গ্রামের কৃষকেরা তাদের আমন ও আউশ ধান বাঁচাতে পার্শ্ববর্তী বেড়িবাধের উপর সেচপাম্প বসিয়ে পানি অপসারণের চেষ্টা করছেন।
অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা থেকে ফসলি জমিকে বাঁচাতে নিজেরাই অর্থ খরচ করে সেচপাম্প লাগিয়ে পানি অপসারণ করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
গ্রামবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ফসল বাঁচানোর এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়সীপ্রশংসা করার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সুদৃষ্টি কামনা করেছেন অনেকে।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে সামাজিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি যে কোন পরিস্থিতিতে কৃষকদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ফটকি নদীর পার্শ্ববর্তী বেড়িবাধের উপর একাধিক সেচপাম্প বসিয়ে দরিশলই, ফুলবাড়ি গ্রামের ষোলগাড়ে ও কুমোরগাড়ে মাঠের পানি অপসারণ করে ফটকি নদীতে ফেলা হচ্ছে।
কেউ পানির লাইন কাটছে, কেউ পাইপ মেশিনের সাথে সেট করছেন, অনেকে আবার মেশিন চালানোর জন্য তেলের ব্যবস্থা করছেন। দেখে মনে হচ্ছে দম ফেলার সময় নেই তাদের। তলিয়ে যাওয়া ফসল বাচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা।
আড়পাড়া ইউনিয়নের কৃষক আবু তালেব বলেন, এই মাঠে আমার প্রায় ৬ বিঘা জমি রয়েছে যার বেশিরভাগই জমি পানিতে তলিয়ে গেছে যেখানে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এই ফসল যদি আমি বাঁচাতে না পারি তাহলে আমার পুরো টাকায় মার যাবে।
একই গ্রামের কৃষক রমজান আলী বলেন, এই মাঠে আমাদের জমি রয়েছে। আমরা সকলেই খুব সকাল থেকে সেচপাম্প লাগিয়ে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছি কারণ এই জমির ফসলের উপর আমাদের সংসার চলে পাশাপাশি আমাদের পরিবারের সদস্যদের ভরণ পোষণের খরচ চলে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবুল হাসনাত বলেন, বিষয়টি আমি জানার পরেই সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে ২০০ হেক্টর জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান,সরকারি কোন সহযোগিতা পেলে সেখানে অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে। আমাদের অফিস থেকে ইতিমধ্যে তালখড়ি ও গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের চাষীদের কে ৩০০ কেজি আমন ধানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।