চরম আবহাওয়ার কবলে পুরো এশিয়া

প্রকাশিতঃ আগস্ট ৮, ২০২৫ | ৫:১৬ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

চীন, পাকিস্তান ও ভারতের কিছু কিছু অংশ তুমুল বৃষ্টি, বন্যায় বিপর্যস্ত। অপরদিকে অসহনীয় গরমে পুড়ছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। এমনই চরম আবহাওয়ার কবলে পড়েছে এশিয়া। এ পরিস্থিতিতে গত কয়েক সপ্তাহে প্রাণ হারিয়েছে ৫০০-এর বেশি মানুষ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের চরম আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়ে উঠছে তীব্র থেকে আরও তীব্র, যা আগে থেকে অনুমান করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বর্তমানে এশিয়াজুড়ে যে অবস্থা বিরাজ করছে, তাতে মহাদেশটি বৈশ্বিক গড়ের প্রায় দ্বিগুণ গতিতে উষ্ণ হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা। গত তিন দশকে বন্যা থেকে শুরু করে তাপপ্রবাহ, খরাসহ চরম আবহাওয়াজনিত কারণে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই অঞ্চলের অন্তত দুই লাখ কোটি ডলার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বার্ষিক ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্সের বরাতে গতকাল বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। রেকর্ড তাপ জাপান মঙ্গলবার তাদের সবচেয়ে উষ্ণ দিন রেকর্ড করেছে, সেদিন গামা অঞ্চলের ইসেসাকি শহরে তাপমাত্রা উঠেছিল ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। চলতি বছর দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ জুন ও জুলাইয়েরও সাক্ষী হয়েছে। মধ্য জুন থেকে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত শুধু হিটস্ট্রোকেই ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। টোকিওর চিকিৎসা পরিদর্শকের কার্যালয় কয়েকদিন আগে এমনটাই বলেছে। অত্যধিক তাপমাত্রার কারণে কোথাও কোথাও রেললাইন বেঁকে যেতে পারে– এমন আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ কিছু ট্রেনের চলাচল স্থগিত রেখেছে। জাপানের এক অফিসকর্মী বলেন, আমি বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন; কিন্তু যখন আমার দৈনন্দিন জীবনের কথা আসে, আমি এয়ার কন্ডিশনার না চালিয়ে থাকতে পারি না। আমি সত্যিই জানি না কী করা উচিত, প্রতিদিনই মরিয়া হয়ে উঠছি। গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। এমন টানা ২২টি ‘গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রাত’ রেকর্ড করেছে দেশটি। এ পরিস্থিতিতে জরুরি পরিষেবা সংস্থাগুলো গরমজনিত অসুস্থতা নিয়ে ফোনও অনেক বেশি পেয়েছে। তীব্র গরমে সিদ্ধ হয়েছে ভিয়েতনামের অনেক এলাকাও। হ্যানয়ে প্রথমবারের মতো অগাস্টের কোনো এক দিনে তাপমাত্রা রেকর্ড ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে রাজধানী শহর ‘আগুনে পোড়া তাওয়া’ হয়ে আছে, বলেছেন নির্মাণ শ্রমিক ন্যাম। তুমুল বৃষ্টি, বন্যা চীনের সাংহাই থেকে বেইজিং পর্যন্ত দেশটির বিস্তৃত অঞ্চল বন্যার পানিতে ভাসছে। এতে সম্পদের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি তো হয়েছেই, অনেকে প্রাণও হারিয়েছেন। আরও বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কায় বুধবার জরুরি পরিষেবার কর্মীরা ওই অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় জঞ্জাল পরিষ্কারে নেমেছেন। ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখন্ডে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে (সামান্য জায়গায় আচমকা প্রবল বৃষ্টিপাত) সৃষ্ট হঠাৎ বন্যায় শতাধিক মানুষ নিখোঁজ হয়েছে। পাকিস্তানে জুন থেকে বৃষ্টিজনিত ঘণ্টায় শতাধিক শিশুসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বন্যায় শত শত বাড়ি ও ভবন ধ্বংস হয়েছে। মঙ্গলবার হংকংয়েও সাড়ে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে, ১৮৮৪ সালের পর অগাস্টে এমন বৃষ্টিবিধৌত দিন আর দেখেনি শহরটি।