হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উর্দু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে উপাচার্যের বাসভবনের গেটে তালা দিয়েছেন ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা। সোমবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গেটের তালা ভেঙে ফেলেন।
তালা দেওয়া ব্যক্তি বুলবুল রহমান রাবি শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি নিয়োগপ্রত্যাশী হিসেবে এই প্রতিবাদ করেছেন।
বুলবুল রহমানের অভিযোগ, ২০২৫ সালের সার্কুলারে উর্দু বিভাগে ৩ জন নিয়োগের কথা উল্লেখ করলেও রাবি প্রশাসন হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে ৬ জনকে নিয়োগ দেওয়ার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সোমবার অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এই নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে জেনে তিনি উপাচার্যের বাসভবনের ফটকে তালা দিয়ে প্রতিবাদ জানান।
বুলবুল রহমান বলেন, ‘উর্দু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আমি উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছিলাম। সেই রিটে আমার পক্ষে রায় এসেছে এবং কলা অনুষদে শিক্ষক নিয়োগে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘আদালতের আদেশের কপি বিভাগে জমা দিতে গেলে গ্রহণ করা হয়নি। পরে ডাকযোগে পাঠালেও বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটি নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে। বিষয়টি উপাচার্যকে জানালে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার রিটের বিরুদ্ধে আপিল করে। আপিলের রায়ে চার মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ শুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই শুনানি না করেই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
বুলবুল জানান, ‘বিজ্ঞপ্তিতে তিনজনের কথা বলা হলেও লিখিত পরীক্ষায় ছয়জনকে উত্তীর্ণ করে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়েছে। এর প্রতিবাদেই আজ উপাচার্যের বাসভবনে তালা দিয়েছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘আজ উপাচার্যের বাসভবনে সিন্ডিকেট সভা বসবে। সেখানে বেশ কিছু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ হবে। সেই সভাকে বাধা দেওয়ার জন্য তিনি তালা মেরেছেন। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। গত কয়েকদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম চলছে। আজ তা চূড়ান্ত করার জন্য সিন্ডিকেট সভা হওয়ার কথা। আমরা ধারণা করি, ওই শিক্ষার্থী সভা বিঘ্নিত করার জন্য তালা দিয়েছে।’
প্রক্টর আরও বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর ধারণা, তাঁকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী, আবেদনকারীর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ ৩ দশমিক ৫-এর উপরে এবং মেধা তালিকায় প্রথম থেকে সপ্তম স্থানের মধ্যে থাকতে হয়। তার কোনোটিই পূরণ না হওয়ায় আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আদালতের নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে তার এ ধরনের কাজ মোটেও সমীচীন হয়নি।’
উল্লেখ্য, আজ সোমবার রাতে উপাচার্যের বাসভবনে সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।