ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ, খুবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি

প্রকাশিতঃ আগস্ট ১২, ২০২৫ | ৭:৩৯ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রুবেল আনসারের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ, যৌন হয়রানি ও অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিভাগের এক ছাত্রী যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রে এই অভিযোগ করেছেন। সোমবার অভিযোগটি তদন্তের জন্য সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) অফিস শেষে অভিযোগটি জমা দেওয়া হয়। রোববার অফিস খোলার পর আবেদনটি দেখে সেটি যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর যে কোনো হয়রানি বন্ধে বর্তমান প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রে জমা দেওয়া তিন পাতার অভিযোগে ওই ছাত্রী ধারাবাহিকভাবে তাকে হয়রানির অভিযোগের বিভিন্ন বর্ণনা দেন। এর সঙ্গে প্রমাণ হিসেবে ওয়াটসঅ্যাপে পাঠানো স্ক্রিনশর্টও জমা দিয়েছেন। অভিযোগের একটি অংশে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, ‘হঠাৎ তিনি একদিন কল দেন এবং তার সাথে দেখা করার অনুরোধ করেন। আমি নিরালা মোড়ে গেলে তিনি কিছু কথা বলার অনুরোধ করে গাড়িতে উঠতে বলেন। তখন কথা বলার একপর্যায়ে গাড়ির ভেতরে (প্রকাশযোগ্য নয়) সরাসরি অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। আমি কথাগুলো শুনে আপত্তি করি এবং রেগে গাড়ি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করি। তিনি তখন ড্রাইভ করা অবস্থায় আমার হাত চেপে ধরেন এবং বলেন ‘জেদ করো না; আমি যা চাই তাই আমার করে নিই। আজ না হোক কাল আমার ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দেবই। জোর করে তার হাত ছাড়ানোর পর আবার বলেন, আমি কখনো এত দিন কারও পেছনে ঘুরিনি, কারও জন্য অপেক্ষা করিনি, তোমার জন্যই এতদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। আমি তোমার রেজাল্টও বাড়িয়ে দেব, তোমার রেজাল্ট ৩.৫০ হয়ে যাবে। এসব শোনার পরে আমি দ্রুত তার গাড়ি থেকে নেমে কোনো রকমে আত্মরক্ষা করি।’ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. রুবেল আনসার বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার কথা বলবেন বলে জানান। পরে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেছেন। এতে অধ্যাপক রুবেল আনসার লিখেছেন, ‘আজ একটি পত্রিকায় একজন ছাত্রীকে জড়িয়ে আমার নামে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকাকে আমি আমার বক্তব্য স্পষ্ট করে জানিয়েছি যে, বিষয়টি ভিত্তিহীন, অবাস্তব ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। উক্ত পত্রিকা সূত্রেই জেনেছি সংশ্লিষ্ট ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্তে যদি আমার দোষ প্রমাণিত হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদেয় শাস্তি আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আর যদি এই ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা না থাকে তদন্ত শেষে তাও সকলে জানতে পারবেন। কাজেই প্রকৃত সত্য উদঘাটন হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য্য ধারণ করার অনুরোধ করছি।’ খুবির যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতি মোছা. তাসলিমা খাতুন বলেন, ‘অভিযোগ তদন্তের জন্য সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কাল (মঙ্গলবার) থেকে কমিটি কাজ শুরু করবে।’