৩০ জুলাইয়ের ভাঙা কাচের ছবি নিয়ে বামজোট প্রার্থীর ব্যাখ্যা

প্রকাশিতঃ সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫ | ৬:০৬ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে বামপন্থি সংগঠনের করা রিটের পর আলোচনায় এসেছেন প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার শেয়ার করা একটি ছবি নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক শুরু হয়। ছবিটি গত বছরের ৩০ জুলাইয়ের সহিংস ঘটনাবলির সঙ্গে যুক্ত কি না, এ প্রশ্ন উঠলে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যাখ্যা দেন তিনি। ফাহমিদা বলেন, যে ভাঙা কাচের ছবিটি নিয়ে এত সমালোচনা হচ্ছে, সেটি মোটেও কোনো সহিংস ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ছবিটি গত বছরের মে মাসে চারুকলায় তোলা হয়েছিল। ‘আমি শিল্পী হিসেবে নানা ছবি তুলি, আর্ট ভালোবাসি। সেই ছবিতে প্রকৃতির একটি প্রতিবিম্ব ছিল। ভাঙা কাচ দিয়ে আসলে আমি হৃদয় ভাঙার প্রতীক বোঝাতে চেয়েছি। তখন অনেক মানুষ মারা যাচ্ছিল, তাই পরিস্থিতির সঙ্গে ছবিটির প্রতীকী মিল ছিল। এটিই ছিল আমার শিল্পীসুলভ প্রতিবাদ,’—বলেন তিনি। প্রোফাইল লাল না করার প্রসঙ্গেও তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তার ভাষায়, ‘আমার প্রোফাইল লাল না থাকায় আমাকে বিরোধী ভাবা হয়েছে। অথচ এটা একধরনের সোশ্যাল ফ্যাসিবাদ। কারো প্রোফাইল লাল না হলে তাকে আন্দোলনের বিপক্ষে ধরে নেওয়া একধরনের মূর্খতা। এটি ফ্যাসিবাদেরই আরেক রূপ।’ রিট প্রসঙ্গে ফাহমিদা জানান, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এস এম ফরহাদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন না। বরং তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পদে যুক্ত ছিলেন এবং তার পদত্যাগের কোনো প্রমাণ নেই। এই কারণেই তার প্রার্থিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিট করা হয়েছে। এর আগে রোববার (৩১ আগস্ট) ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টে রিট করেন ফাহমিদা। বামপন্থী সংগঠন অপরাজেয় ৭১ ও অদম্য ২৪-এর প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। বিচারপতি এস কে তাহসিন আলী ও হাবিবুল গণির হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটি দাখিল হয়। ফাহমিদার এ রিট দাখিলের পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সহিংস ঘটনায় নিহত হয় শত শত মানুষ, আহত হন অগণিত। সরকার ৩০ জুলাইকে ‘রাষ্ট্রীয় শোক দিবস’ ঘোষণা করলেও আন্দোলনরত ছাত্ররা সেটি প্রত্যাখ্যান করে অনলাইনে লাল প্রোফাইল, ব্যানার ও প্রতীকী পোস্টের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানায়। কোটি মানুষ সেদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রাঙিয়ে তোলে বিপ্লবের লাল রঙে। কিন্তু ফাহমিদা সেই কর্মসূচিতে প্রোফাইল লাল করেননি। বরং তিনি সেদিন ভাঙা কাচের একটি ছবি পোস্ট করেন, যা দেখে অনেকে অভিযোগ তোলেন—ছবিটি নাকি মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত। যদিও তিনি সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করে জানান, ছবিটি সেই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই যুক্ত নয়, বরং ছিল কেবল একটি শিল্পীসুলভ প্রতিবাদ।