ট্রাম্পের পরবর্তী টার্গেট কি ভেনেজুয়েলার শাসন পরিবর্তন

প্রকাশিতঃ অক্টোবর ৫, ২০২৫ | ৬:১১ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার সরাসরি পরিকল্পনা না করলেও, সামরিক চাপ বাড়ানোর মাধ্যমে তারা ঘটনাচক্রে সেই দিকেই এগোচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার ভেতরে সক্রিয় মাদক চক্রগুলোর ওপর সামরিক হামলা চালানোর চিন্তাভাবনা করছে, যা মাদুরোকে দুর্বল করার একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশ। যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো কোনো পদক্ষেপের অনুমোদন দেননি এবং মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। এই কৌশলকে ট্রাম্প প্রশাসন সরাসরি শাসন পরিবর্তনের কথা না বলে ‘মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ হিসেবে উপস্থাপন করছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই কট্টরনীতি বাস্তবায়নের পেছনে প্রধান চালিকা শক্তি। তিনি মনে করেন, মাদুরোর শাসন কিউবার গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা টিকে আছে। ট্রাম্প নিজে যদিও শাসন পরিবর্তনের চেষ্টা অস্বীকার করেছেন, তবে তিনি ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে বড় সামরিক শক্তি মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। এই বৈপরীত্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন যে পথে এগোচ্ছে, তাতে ভেনেজুয়েলায় সরকার পরিবর্তন অনিবার্য হতে পারে, যা হবে চরম দায়িত্বহীনতা। ভেনেজুয়েলার দুর্বল প্রতিষ্ঠান এবং বিভক্ত বিরোধী দলের কারণে যেকোনো অন্তর্বর্তী সরকারকে অর্থনৈতিক সংকট ও সহিংসতার মুখোমুখি হতে হবে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশল বিপরীত ফল বয়ে আনতে পারে। মাদুরো ইতিমধ্যেই জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং সামরিক-বেসামরিক বাহিনীকে সক্রিয় করে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী আবেগ জাগিয়ে তুলছেন। কিউবা, ইরান, উত্তর কোরিয়ার মতো উদাহরণ দেখায়, বিদেশি চাপকে ‘সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন’ হিসেবে চিত্রিত করে স্বৈরশাসক আরও শক্তিশালী হতে পারেন। সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো, ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হলে যুক্তরাষ্ট্রে ভেনজুয়েলার অভিবাসীর সংখ্যা বাড়বে। দেশটি ইতোমধ্যেই সত্তর লাখের বেশি শরণার্থী ও অভিবাসীর জন্ম দিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের উচিত, সরকার পরিবর্তনের প্রলোভন থেকে সরে এসে নির্দিষ্ট লক্ষ্য, যেমন—মাদকবিরোধী সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক স্বাভাবিকীকরণের জন্য সংলাপে মনোযোগ দেওয়া।