আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বুধবার (৮ অক্টোবর) মন্তব্য করেছেন যে বিশ্ব অর্থনীতি বর্তমানে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে, তবে এটি এখনো অনিশ্চয়তা এবং দীর্ঘমেয়াদি দুর্বল প্রবৃদ্ধির মুখোমুখি। তিনি বলেন, “বিশ্ব অর্থনীতি ভয় পাওয়ার মতো খারাপ নয়, কিন্তু আমাদের যা প্রয়োজন তার চেয়ে ভালোও নয়।”
আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভার আগে জর্জিয়েভার এই মন্তব্য এল। তিনি জানান, মূলত যুক্তরাষ্ট্র সহ কিছু উন্নত, উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশের প্রত্যাশার চেয়ে ভালো পারফরম্যান্সের কারণে এ বছর ও আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি সামান্যই মন্থর হবে বলে আইএমএফ আশা করছে।
জর্জিয়েভা উল্লেখ করেন, সচেতন নীতিমালা, বেসরকারি খাতের অভিযোজন ক্ষমতা, প্রত্যাশার চেয়ে কম শুল্ক হার এবং অনুকূল আর্থিক পরিবেশের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি একাধিক ধাক্কা সহ্য করেও তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থেকেছে। তিনি বলেন, \"বিশ্ব এখনও পর্যন্ত শুল্কযুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়নি—অন্তত এখন পর্যন্ত।\" তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, শুল্কনীতির পুরো প্রভাব এখনও প্রকাশ পায়নি এবং বিশ্ব অর্থনীতির প্রকৃত স্থিতিস্থাপকতা এখনও পুরোপুরি পরীক্ষা হয়নি।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের গড় শুল্কহার এপ্রিলের ২৩ শতাংশ থেকে কমে বর্তমানে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশে নেমেছে।
আইএমএফ এখনও মনে করে, মধ্যমেয়াদে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি প্রায় ৩ শতাংশের মধ্যে থাকবে, যা কোভিড-পূর্ব সময়ের চেয়ে কম। জর্জিয়েভা বলেন, “বিশ্ব প্রবৃদ্ধির ধারা বদলাচ্ছে—চীন ধীরে ধীরে মন্থর হচ্ছে, আর ভারত পরিণত হচ্ছে নতুন প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তিতে।”
তিনি ইউরোপের অর্থনৈতিক স্থবিরতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচিত একজন ‘সিঙ্গেল মার্কেট সিজার’ নিয়োগ করা, যিনি সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করে আর্থিক ও জ্বালানি খাতের একীভূতকরণ ত্বরান্বিত করবেন। তিনি দেশগুলোকে দীর্ঘমেয়াদে উৎপাদন বৃদ্ধি, রাজস্ব স্থিতি পুনর্গঠন এবং অতিরিক্ত বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবিলার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।