 
	
              
                  অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গণভোট আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। তাদের বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের তালিকা তৈরি হয়েছে।
একই দিনে গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা হলে ভোটকেন্দ্র এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বাড়বে। বিষয়টি মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিতে হবে। আর পৃথক দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের আয়োজন করলে দুই নির্বাচনের যে ব্যয় সে অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
পাশাপাশি নির্বাচনের সঙ্গে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখতে হবে। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের এ নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, বৈঠকে নির্বাচন উপলক্ষ্যে সারা দেশের হেলিপ্যাড সংস্কার করতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা সামাল দিতে মেডিকেল টিম গঠন করার জন্য বলা হয়েছে।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা সচল রাখতে বলা হয়েছে, যাতে ভোটগ্রহণের ফুটেজ সংরক্ষণ করা যায় এবং অনিয়ম হলে দায়ীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়। নির্বাচনি প্রচারে সংসদ টিভি ব্যবহার করতে চেয়েছে ইসি। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র হবে, সেগুলোতে যাতায়াতের সড়ক মেরামত করতে বলেছে কমিশন।
বৈঠকে আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, ভোটকেন্দ্রে যাতায়াতের সড়ক মেরামত, নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিতদের যানবাহন ও লজিস্টিক সাপোর্ট, নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল তৈরি, ঋণ ও বিল খেলাপিদের তালিকা হালনাগাদ ও সরবরাহ, ভোটের দিন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, কারাবন্দিদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে সহায়তা করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবরা অংশ নেন।
অন্যান্যের মধ্যে আরও ছিলেন, পররাষ্ট্র, অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগসহ ৩১টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরের প্রধানেরা।
বৈঠকে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন ও নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ গণভোটের বিষয়ে বক্তব্য দেন। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তারা বলেন, গণভোট নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। আমাদের কাজ হচ্ছে সুষ্ঠুভাবে তা সম্পন্ন করা। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে নাকি পৃথক দিনে হবে তা নির্ধারণ করবে সরকার।
তারা আরও বলেন, যখনই গণভোট হোক না কেন, এ নির্বাচনের সঙ্গে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখতে হবে। সচিবদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, আপনাদের মাথায় নির্বাচনের বিষয়টি রাখবেন। সরকারি সফরে কোথাও গেলে সম্ভব হলে সেখানকার নির্বাচনি প্রস্তুতি সম্পর্কেও খোঁজখবর নেবেন।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আমরা খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা তৈরি করেছি। ওই তালিকা অনুযায়ী আপনারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে করলে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বেড়ে যাবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র হবে, সেসব প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও আসা-যাওয়ার রাস্তা মেরামত করার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।
তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের ব্যয়ের টাকার সংস্থান করতে হবে, যাতে যথাসময়ে অর্থ ছাড় করা যায়।
বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, গণভোট কখন হবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত সরকার নেবে। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন করার জন্য আমরা সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছি। নির্বাচন অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণের জন্য বলা হয়েছে।
কমিশন ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নজরে এনেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে ভোটকেন্দ্র এবং সেখানে যাওয়ার রাস্তা মেরামত ও সংস্কারের অনুরোধ জানিয়েছি। ফেব্রুয়ারি মাসে আবহাওয়া অনুকূল থাকলেও আগে থেকেই এসব কেন্দ্রের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন তারা নির্বাচনি কাজে ব্যবহৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আগেভাগে প্রস্তুত করে রাখেন।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রসঙ্গে আখতার আহমেদ বলেন, ইসি প্রিজাইডিং, সহকারী প্রেজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের একটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল তৈরি করছে, যেখানে সরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তারাও থাকবেন। আমরা চাই নিরপেক্ষ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে। সভা সূত্র জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নিরপেক্ষ শিক্ষকদের তালিকা তৈরিতে সহযোগিতা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অন্যান্য আলোচনার বিষয়ে সচিব জানান, সভায় পরিবহণ ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা হয়, বিশেষ করে দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টার ল্যান্ডিং সুবিধা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরাও বিস্তারিতভাবে তাদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ভোটের দিন প্রতিটি উপজেলায় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ইউনিয়ন পর্যায়েও ক্লাস্টারভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করা হবে। এসব টিমে একজন চিকিৎসক, একজন নার্স ও প্রয়োজনীয় ওষুধ থাকবে।
সভায় নির্বাচনি প্রচার ও জনসচেতনতা কার্যক্রম বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) নেতৃত্বে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়। ইসি সংসদ টেলিভিশনের এয়ারটাইম এবং বিটিভি নিউজের ফ্ল্যাশ বার্তা ব্যবহার করে ভোটার সচেতনতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আগমনের ক্ষেত্রে ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুত করার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি সভায় জানান, ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য হালনাগাদ ও প্রদানের জন্য তাদের ৪-৫ দিন সময় প্রয়োজন।
বাজেট বরাদ্দ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, অর্থ বিভাগের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তবে সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় খরচ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় ব্যয় না করারও পরামর্শ দেওয়া হয়। সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। ভোটকালীন সময়ে নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের যথাযথভাবে নিয়োগ নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়।
ইসি সচিব বলেন, প্রবাসী ভোটার, সরকারি চাকরিজীবী ও নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের নতুন ব্যবস্থা কার্যকর করতে ইসি কাজ করছে। আমরা পোস্টাল ভোটিংয়ের একটি ট্রায়াল অ্যাপ তৈরি করেছি, যা আগামী ১৬ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ভ্রান্ত তথ্য ও বিভ্রান্তি প্রতিরোধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হবে, যাতে ভুল তথ্য প্রচার বন্ধ রাখা যায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গণভোট আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। তাদের বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের তালিকা তৈরি হয়েছে।
একই দিনে গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা হলে ভোটকেন্দ্র এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বাড়বে। বিষয়টি মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিতে হবে। আর পৃথক দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের আয়োজন করলে দুই নির্বাচনের যে ব্যয় সে অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
পাশাপাশি নির্বাচনের সঙ্গে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখতে হবে। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের এ নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, বৈঠকে নির্বাচন উপলক্ষ্যে সারা দেশের হেলিপ্যাড সংস্কার করতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা সামাল দিতে মেডিকেল টিম গঠন করার জন্য বলা হয়েছে।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা সচল রাখতে বলা হয়েছে, যাতে ভোটগ্রহণের ফুটেজ সংরক্ষণ করা যায় এবং অনিয়ম হলে দায়ীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়। নির্বাচনি প্রচারে সংসদ টিভি ব্যবহার করতে চেয়েছে ইসি। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র হবে, সেগুলোতে যাতায়াতের সড়ক মেরামত করতে বলেছে কমিশন।
বৈঠকে আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, ভোটকেন্দ্রে যাতায়াতের সড়ক মেরামত, নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিতদের যানবাহন ও লজিস্টিক সাপোর্ট, নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল তৈরি, ঋণ ও বিল খেলাপিদের তালিকা হালনাগাদ ও সরবরাহ, ভোটের দিন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, কারাবন্দিদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে সহায়তা করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবরা অংশ নেন।
অন্যান্যের মধ্যে আরও ছিলেন, পররাষ্ট্র, অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগসহ ৩১টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরের প্রধানেরা।
বৈঠকে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন ও নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ গণভোটের বিষয়ে বক্তব্য দেন। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তারা বলেন, গণভোট নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। আমাদের কাজ হচ্ছে সুষ্ঠুভাবে তা সম্পন্ন করা। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে নাকি পৃথক দিনে হবে তা নির্ধারণ করবে সরকার।
তারা আরও বলেন, যখনই গণভোট হোক না কেন, এ নির্বাচনের সঙ্গে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখতে হবে। সচিবদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, আপনাদের মাথায় নির্বাচনের বিষয়টি রাখবেন। সরকারি সফরে কোথাও গেলে সম্ভব হলে সেখানকার নির্বাচনি প্রস্তুতি সম্পর্কেও খোঁজখবর নেবেন।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আমরা খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা তৈরি করেছি। ওই তালিকা অনুযায়ী আপনারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে করলে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বেড়ে যাবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র হবে, সেসব প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও আসা-যাওয়ার রাস্তা মেরামত করার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।
তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের ব্যয়ের টাকার সংস্থান করতে হবে, যাতে যথাসময়ে অর্থ ছাড় করা যায়।
বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, গণভোট কখন হবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত সরকার নেবে। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন করার জন্য আমরা সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছি। নির্বাচন অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণের জন্য বলা হয়েছে।
কমিশন ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নজরে এনেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে ভোটকেন্দ্র এবং সেখানে যাওয়ার রাস্তা মেরামত ও সংস্কারের অনুরোধ জানিয়েছি। ফেব্রুয়ারি মাসে আবহাওয়া অনুকূল থাকলেও আগে থেকেই এসব কেন্দ্রের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন তারা নির্বাচনি কাজে ব্যবহৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আগেভাগে প্রস্তুত করে রাখেন।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রসঙ্গে আখতার আহমেদ বলেন, ইসি প্রিজাইডিং, সহকারী প্রেজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের একটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল তৈরি করছে, যেখানে সরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তারাও থাকবেন। আমরা চাই নিরপেক্ষ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে। সভা সূত্র জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নিরপেক্ষ শিক্ষকদের তালিকা তৈরিতে সহযোগিতা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অন্যান্য আলোচনার বিষয়ে সচিব জানান, সভায় পরিবহণ ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা হয়, বিশেষ করে দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টার ল্যান্ডিং সুবিধা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরাও বিস্তারিতভাবে তাদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ভোটের দিন প্রতিটি উপজেলায় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ইউনিয়ন পর্যায়েও ক্লাস্টারভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করা হবে। এসব টিমে একজন চিকিৎসক, একজন নার্স ও প্রয়োজনীয় ওষুধ থাকবে।
সভায় নির্বাচনি প্রচার ও জনসচেতনতা কার্যক্রম বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) নেতৃত্বে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়। ইসি সংসদ টেলিভিশনের এয়ারটাইম এবং বিটিভি নিউজের ফ্ল্যাশ বার্তা ব্যবহার করে ভোটার সচেতনতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আগমনের ক্ষেত্রে ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুত করার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি সভায় জানান, ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য হালনাগাদ ও প্রদানের জন্য তাদের ৪-৫ দিন সময় প্রয়োজন।
বাজেট বরাদ্দ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, অর্থ বিভাগের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তবে সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় খরচ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় ব্যয় না করারও পরামর্শ দেওয়া হয়। সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। ভোটকালীন সময়ে নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের যথাযথভাবে নিয়োগ নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়।
ইসি সচিব বলেন, প্রবাসী ভোটার, সরকারি চাকরিজীবী ও নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের নতুন ব্যবস্থা কার্যকর করতে ইসি কাজ করছে। আমরা পোস্টাল ভোটিংয়ের একটি ট্রায়াল অ্যাপ তৈরি করেছি, যা আগামী ১৬ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ভ্রান্ত তথ্য ও বিভ্রান্তি প্রতিরোধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হবে, যাতে ভুল তথ্য প্রচার বন্ধ রাখা যায়।