শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় কালমেইগি (স্থানীয় নাম: টিনো) ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে।
এ পর্যন্ত অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং প্রায় ৪ লাখ মানুষকে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেবু দ্বীপ। সেখানে তীব্র বন্যা, পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বাতাস ঘরবাড়ি, রাস্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত করেছে।
সেবুতে জলাবদ্ধতা ও ধ্বংসযজ্ঞ
সেবু দ্বীপ দেশের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চলের একটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে—
অসংখ্য মানুষ ঘরের ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন,
রাস্তা নদীতে পরিণত হয়েছে,
গাড়ি ও কন্টেইনার ভেসে যাচ্ছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অধিকাংশ মৃত্যুর কারণ ডুবে যাওয়া। আকস্মিক বন্যায় ছোট ছোট ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। পানি নামার পর জায়গায় জায়গায় জমেছে ঘন কাদার স্তর। উদ্ধারকর্মীরা নৌকায় করে আটকা পড়া মানুষদের সরিয়ে নিচ্ছেন।
সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৬
দুর্গত এলাকায় উদ্ধার অভিযানে অংশ নিতে যাওয়ার পথে একটি সামরিক হেলিকপ্টার নর্থ মিন্দানাওয়ের আগুসান ডেল সুর এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে ফিলিপাইন এয়ার ফোর্সের (PAF) ছয় জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিহত হয়েছেন।
কর্তৃপক্ষের মন্তব্য
সেবুর গভর্নর পামেলা বারিকুয়াত্রো জানান,
“আমরা ভেবেছিলাম প্রবল বাতাসই সবচেয়ে বড় হুমকি হবে, কিন্তু ভয়ঙ্কর বন্যাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। পানি দ্রুত বাড়তে থাকায় মানুষ পালাতে পারেনি।”
ফিলিপাইনে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ
প্রতি বছর ফিলিপাইন প্রায় ২০টি টাইফুন ও ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হয়। এ বছর এর আগে সুপার টাইফুন রাগাসা (নানডো) ও টাইফুন বুয়ালই (ওপং) আঘাত হানে। এ ছাড়া গত মাসেই কেন্দ্রীয় ফিলিপাইনে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে বহু মানুষ নিহত হন, যার মধ্যে সেবুই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল ছিল।
পরবর্তী গন্তব্য হাওয়াই ও ভিয়েতনাম
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, কালমেইগি এখন হাওয়াইয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, এরপর ভিয়েতনাম উপকূলের দিকে যাবে। ইতোমধ্যেই ভিয়েতনামে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা নতুন বিপদের আশঙ্কা তৈরি করেছে।