অ্যান্টার্কটিকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ৮, ২০২৫ | ৫:২২ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

পৃথিবীর দক্ষিণ মেরু বরফ আচ্ছাদিত অ্যান্টার্কটিকার বড় ধরনের পরিবর্তনের দিকে এগোচ্ছে– এমন খবর নতুন নয়। তবে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে প্রতিদিনই নতুন নতুন খবর হয়। এ পরিবর্তনের প্রভাব হতে পারে বিশ্বব্যাপী ও সুদূরপ্রসারী। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণে বড় ধরনের অগ্রগতি না হলে অ্যান্টার্কটিকার এ পরিবর্তন দূরবর্তী অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন মহাদেশে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এএনইউ) ও নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউএনএসডব্লিউএ) বিজ্ঞানীদের ও অস্ট্রেলিয়ার সব প্রধান অ্যান্টার্কটিক বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের দ্বারা নেচারে প্রকাশিত নতুন গবেষণা থেকে এ সতর্কতা এসেছে। দলটি দেখেছে, অ্যান্টার্কটিকাজুড়ে এখন একসঙ্গে একাধিক বৃহৎ আকারের পরিবর্তন ঘটছে। এ প্রক্রিয়াগুলো ‘আন্তঃসংযুক্ত’, জলবায়ু ব্যবস্থা, সমুদ্রপৃষ্ঠ ও বাস্তুতন্ত্রের ওপর বিশ্বব্যাপী চাপ তীব্রতর করছে। গবেষকরা পশ্চিম অ্যান্টার্কটিক বরফের চাদরকে বায়ুমণ্ডলীয় কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে পড়ার চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বলে চিহ্নিত করেছেন। এর সম্পূর্ণ পতন বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা তিন মিটারেরও বেশি বাড়িয়ে দিতে পারে, যা উপকূলীয় জনসংখ্যা ও বিশ্বব্যাপী প্রধান শহরগুলোকে বিপন্ন করে তুলবে। অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্টার্কটিক বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী ও গবেষণার প্রধান লেখক ড. নেরিলি আব্রাম সতর্ক করে বলেন, এ ধরনের ঘটনা ‘আগামী প্রজন্মের জন্য বিপর্যয়কর পরিণতি’ নিয়ে আসবে। তিনি বলেন, ‘অ্যান্টার্কটিকার বরফ, মহাসাগর ও বাস্তুতন্ত্রজুড়ে ইতোমধ্যেই দ্রুত পরিবর্তন শনাক্ত করা হয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রতিটি ডিগ্রির সঙ্গে এটি আরও খারাপ হতে চলেছে।’ ড. আব্রামের মতে, অ্যান্টার্কটিক সমুদ্রের বরফের তীব্র হ্রাস আরেকটি উদ্বেগজনক সংকেত। বরফের ক্ষয় আরেকটি আকস্মিক পরিবর্তন, যার বিভিন্ন ধরনের প্রভাব রয়েছে। এর মধ্যে আছে– অ্যান্টার্কটিকার চারপাশে ভাসমান বরফের তাকগুলোকে ঢেউচালিত পতনের জন্য আরও সংবেদনশীল করে তোলা। দক্ষিণ মহাসাগরে বরফের হ্রাস ইঙ্গিত দেয় যে, পুরো ব্যবস্থা আগে ধারণার চেয়ে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের নানা স্থানে প্রভাব এ গবেষণার সহলেখক অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর এক্সিলেন্স ইন অ্যান্টার্কটিক সায়েন্সের অধ্যাপক ম্যাথিউ ইংল্যান্ডের ব্যাখ্যা, অ্যান্টার্কটিকের এ দ্রুত পরিবর্তন অস্ট্রেলিয়ার জন্য মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার জন্য এর পরিণতিগুলোর মধ্যে রয়েছে– সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, যা উপকূলীয় সম্প্রদায়ের ওপর প্রভাব ফেলবে। দক্ষিণ মহাসাগর বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড অপসারণ করতে কম সক্ষম হবে। ফলে অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় উষ্ণতা বাড়বে।’ সূত্র: সায়েন্স ডেইলি