পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বহু হতাহত, ফের উত্তপ্ত মণিপুর


ভারতের মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনী প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার ব্যাপক সংঘাত হয়েছে। মণিপুরের কুকি অধ্যুষিত কাংপোকপি জেলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় বিক্ষোভকারীরা। এতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। মণিপুরের ইম্ফল পশ্চিমের সীমান্তবর্তী কাংপোকপি জেলার উয়োকচিংয়ে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর মোতায়েন প্রত্যাহারের দাবিতে এই সংঘাত হয়। এই ঘটনাটি ঘটেছে অনির্দিষ্টকালের জন্য অর্থনৈতিক অবরোধ এবং ২৪ ঘণ্টার সম্পূর্ণ শাটডাউনের মধ্যেই। শুক্রবার সন্ধ্যায় কাংপোকপি থানায় ঢুকে পাথর ছুঁড়তে থাকে বিক্ষোভকারীরা। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর একটিতে দেখা যায়, কাংপোকপির এক পুলিশ কর্মকর্তার মাথা থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এদিকে গত কিছু দিন ধরেই চলমান অস্থিরতার মাঝে অঞ্চলটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অর্থনৈতিক অবরোধ এবং ২৪ ঘণ্টার সম্পূর্ণ শাটডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে তার মধ্যেই এই অস্থিরতার ঘটনা ঘটে। যেখানে উভয়ই কুকি-জো গোষ্ঠী ও পার্শ্ববর্তী গ্রাম সাইবোলে কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বাহিনী মোতায়েনের প্রতিবাদ জানায় তারা। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে, যার ফলে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়। আদিবাসী সংগঠনের অর্থনৈতিক অবরোধ শুক্রবার মণিপুরের কুকি-জো অধ্যুষিত এলাকায় কাংপোকপি জেলার একটি গ্রামে মহিলাদের উপর নিরাপত্তা বাহিনীর কথিত পদক্ষেপের প্রতিবাদে একটি আদিবাসী সংগঠনের অর্থনৈতিক অবরোধ পরিলক্ষিত হয়। ৩১ ডিসেম্বর সাইবোল গ্রামে মহিলাদের ওপর লাঠিচার্জের অভিযোগের প্রতিবাদে কমিটি অন ট্রাইবাল ইউনিটি (সিওটিইউ) নামে আরও একটি সংগঠন জেলায় ২৪ ঘণ্টার শাটডাউন পালন করে। আদিবাসীদের সংগঠন কুকি-জো কাউন্সিল জানিয়েছে, ‘আদিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদার প্রতি অবজ্ঞার’ প্রতিবাদে ২ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক অবরোধ শনিবার রাত ২টা পর্যন্ত চলবে। অবরোধের সময় কুকি-জো অধ্যুষিত এলাকা দিয়ে যানবাহন চলাচল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন সীমিত থাকবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আদিবাসী সংগঠনের চেয়ারম্যান হেনলিয়েনথাং থাঙ্গলেট চুরাচাঁদপুরে জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর লাঠিচার্জে আহত মহিলাদের ক্ষতিপূরণ না দিলে কুকি জো কাউন্সিল বিক্ষোভ আরও জোরদার করবে। তিনি বলেন, ‘বাফার জোনের পবিত্রতা রক্ষায় সরকার ব্যর্থ হলে ফের অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা হবে।’ মঙ্গলবার কাংপোকপি জেলায় কুকি-জো নারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ জনতার মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে জাতিগত সংঘাত কবলিত রাজ্যটিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশএক্স-এ একটি পোস্টে জানিয়েছে, জনতা সেনাবাহিনী, বিএসএফ এবং সিআরপিএফের যৌথ দল মোতায়েনকে ‘বাধাগ্রস্ত’ করার চেষ্টা করার পরে এই ঘটনা ঘটে।