অবন্তিকার মায়ের কথা শুনলেন তদন্ত কমিটি, আসামিদের বক্তব্যও নিলেন
অনলাইন নিউজ ডেক্স
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা। শুক্রবার সকালে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে কমিটির ৫ সদস্য অবন্তিকার কুমিল্লার বাগিচাগাঁওয়ের বাসায় যান। তারা অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম ও ভাই জারিফ জাওয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাহমিনা বেগম অবন্তিকার একই বিভাগের সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানসহ তার সহযোগীদের দ্বারা অবন্তিকাকে হয়রানির তথ্য তুলে ধরেন।
এরপর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে কারাগারে গিয়ে এ মামলার দুই আসামি রায়হান সিদ্দিকী আম্মান ও সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের সঙ্গে দেখা করে তাদের বক্তব্য নেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন জানান, তদন্তের স্বার্থে তথ্য সংগ্রহের জন্য তারা কুমিল্লায় এসেছেন। তবে কবে নাগাদ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে তা নিশ্চিত করেননি।
তিনি বলেন, অবন্তিকা আমাদের ছাত্রী ছিল, তার এমন মৃতুতে জবি প্রশাসন মর্মাহত। তাকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না এটা সত্য, কিন্ত পরিবার যেন বিচার পায় সেই লক্ষে আমরা তদন্তের কাজ করছি। আমরা আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক তদন্তের বিষয়ে তার মায়ের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা কথা বলেছি।
শোকার্ত অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, মেয়ে জীবিত থাকতে বিচার পায়নি। আমার মেয়ের জীবনটা শেষ হয়ে গেল। কত স্বপ্ন ছিল মেয়েটাকে নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন যতটা আন্তরিক, আগে তা থাকলে হয়তো মেয়েকে হারাতে হতো না।
এ সময় তদন্ত কমিটির সদস্য সমাজবিজ্ঞান বিভাগর ডিন অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন, আইন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. মাসুম বিল্লাহ, সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ঝুমুর আহমেদ, সদস্য সচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার রঞ্জন কুমার এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে সহকারী প্রক্টর মুনিরা জাহান সুমি অবন্তিকার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন।
এরপর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে কারাগারে গিয়ে এ মামলার দুই আসামি রায়হান সিদ্দিকী আম্মান ও সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের সঙ্গে দেখা করে তাদের বক্তব্য নেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, জবির তদন্ত কমিটির সদস্যরা বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কারাগারে যান। এ সময় তারা কারাবিধি মেনে অবন্তিকার মামলায় কারাগারে থাকা দুই আসামির সঙ্গে দেখা করে তাদের বক্তব্য নেন।
১৫ মার্চ শুক্রবার রাতে কুমিল্লা নগরের উত্তর বাগিচাগাঁও এলাকার ‘অরণি’ নামের ভাড়া বাসায় সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা। আত্মহত্যার আগে তিনি নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন এবং মৃত্যুর জন্য জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মানকে দায়ী করেন। ঘটনার পরদিন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। ডিএমপি পুলিশ ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করে রোববার কুমিল্লা পুলিশে হস্তান্তর করে। রিমান্ড শেষে তারা বর্তমানে কুমিল্লা কারাগারে আছেন।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।