আইফোন তৈরি করবে টাটা গ্রুপ
অনলাইন নিউজ ডেক্স
ভারতীয় বহুজাতিক সংস্থা টাটা গ্রুপ দেশটিতে অবস্থিত উইস্ট্রন আইফোন ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানাটি অধিগ্রহণ করতে যাচ্ছে। সূত্র বলছে, অধিগ্রহণের কাজ এখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। বলা যায়, সংস্থা দুটির মধ্যে চুক্তি সইয়ের সব ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত।
আনুষ্ঠানিকভাবে ৫ হাজার কোটি রূপির বেশি মূল্যের চুক্তিটি এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ সই হবে। কর্ণাটকে অবস্থিত কারখানাটি বর্তমানে আইফোন-১৪ আর আইফোন-১২ মডেল তৈরিতে কাজ করছে। তা ছাড়া এই হাবে মোট আটটি অ্যাসেম্বলি লাইন সচল আছে।
জানা গেছে, উইস্ট্রন আইফোন নির্মাণের হাব অধিগ্রহণের পর টাটা গ্রুপ চলতি বছরেই আসন্ন আইফোন ১৫ মডেল অ্যাসেম্বল করার কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করছে। রতন টাটা গৃহীত উদ্যোগের ফলে বিশ্বখ্যাত অ্যাপল পণ্য তৈরিতে ভারত বেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হবে।
বর্তমানে মোট তিনটি তাইওয়ানি সংস্থা উইস্ট্রন, পেগাট্রন আর ফক্সকন ভারতে অ্যাপলের পণ্য অ্যাসেম্বল করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। তবে অচিরেই উইস্ট্রন ভারতের টাটা গ্ৰুপের হাতে তাদের ‘আইফোন’ ম্যানুফ্যাকচারিং ব্যবসা স্থানান্তর করে দেশ ছেড়ে যাবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফক্সকন আর পেগাট্রন নির্মাতাদ্বয় উৎপাদন পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
রতন টাটা গৃহীত উদ্যোগের ফলে অ্যাপল পণ্য তৈরি হবে ভারতে।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, টাটা গ্ৰুপ আইফোন উৎপাদনে নতুন উদ্যোক্তা। ভারতের অন্যতম পুরোনো ও বিখ্যাত ব্যবসায়িক সংস্থা হিসেবে অ্যাপল পণ্য উৎপাদনে নিজেদের সুনাম বাড়ানোর চেষ্টা করবে টাটা। ফলে ভারতে আইফোন নির্মাণে উল্লেখযোগ্য গতির সঞ্চার হবে।
প্রশ্ন উঠছে, হঠাৎ করে অ্যাপল পণ্য উৎপাদনে টাটা গ্রুপ কেন এতটা উৎসাহ দেখাচ্ছে। ভারত সরকার সক্রিয় ভারতকে একটি ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ হিসেবে বিশ্বের সামনে উপস্থিত করতে চাইছে। সেজন্যই স্বনামধন্য দেশি সংস্থাগুলোকে উৎসাহিত করছে।
আরেকটি বিশেষ দিক হচ্ছে, ভূরাজনৈতিক সমীকরণে অ্যাপল চীন থেকে তাদের পণ্য উৎপাদন অন্যত্র সরিয়ে নিতে চাইছে। দুটি কারণেই রতন টাটা অ্যাপল পণ্য নির্মাণে উৎসাহ দেখিয়েছে। শিল্প বিশ্লেষকেরা বলছেন, উইস্ট্রন কারখানা অধিগ্রহণ পদক্ষেপ টাটা গ্রুপের জন্য যথেষ্ট লাভজনক প্রমাণিত হবে।
সূত্র বলছে, শুধু উইস্ট্রন নয়, টাটা গ্ৰুপ পেগাট্রনের আইফোন উৎপাদন কারখানাও অধিগ্রহণ নিয়ে ভাবছে। যদিও খবরটিকে আপাতত সবাই গুজব হিসেবেই বিবেচনা করছেন।
জানা গেছে, নতুন অধিগ্রহণের ফলে চাকরি হারাতে পারেন ২ হাজারের বেশি শ্রমিক। তা ছাড়া চার শতাধিক জ্যেষ্ঠ এক্সিকিউটিভ ছাড়াও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ চাকরিচ্যুত হতে পারেন। কারখানার মালিকানা হস্তান্তর হলে কর্মী ছাঁটাই হওয়াটা স্বাভাবিক। কেননা প্রতিটি সংস্থাই তাদের সুবিধামতো সাংগঠনিক পরিবর্তন করে থাকে। ইতিমধ্যে টাটা গ্রুপ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। অবশ্য রতন টাটা চাকরিচ্যুত কর্মীদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
টাটা গ্ৰুপের নেওয়া উদ্যোগটি কারিগরি শিল্পে দেশি বহুজাতিক সংস্থাগুলোর সক্রিয় উপস্থিতি এবং ক্রমবর্ধমান সম্প্রসারণের প্রবণতাকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করবে।
অ্যাপল পণ্য নির্মাণে রতন টাটা পরিচালিত সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে নিজেদের ব্যবসা বিস্তারের আরও সুযোগ পাবে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রযুক্তিশিল্পে ক্রমাগত বৃদ্ধি ও বিকাশে রতন টাটা বিশেষ ব্র্যান্ড হয়ে উঠতে চলেছে। অ্যাপল কারখানা অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হলে ভারতীয় ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের জন্য তা হবে বিশেষ উদাহরণযোগ্য ঘটনা।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।