আবার গ্রেফতার সেই চেয়ারম্যান এবার অভিযোগ ছিনতাইয়ের
অনলাইন নিউজ ডেক্স
আবারও গ্রেফতার হয়েছেন কুড়িগ্রামের মাদক ও অপরাধ জগতে ‘চেয়ারম্যান’ খ্যাত মফিজুল ইসলাম (৩৫)। তবে এবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, চালককে অচেতন করে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ছিনতাইয়ের। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বিকালে এক সহযোগীসহ তাকে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ। তবে তাকে আটকের নায়ক স্থানীয় কয়েকজন যুবক।
মফিজুল ইসলাম কুড়িগ্রাম সদরের বেলগাছা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সরা ভোগরাম (যোগাযোগের মোড়) গ্রামের বাসিন্দা। পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী মফিজুল মাদক দুনিয়ায় ‘চেয়ারম্যান’ নামে পরিচিত। তাকে এ নামেই চেনে সাঙ্গপাঙ্গ ও লেনদেনকারীরা। তার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগসহ অন্তত ছয়টি মাদক মামলা রয়েছে। একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে আবারও তিনি পুরোদস্তুর মাদক কারবারি! রাত হলেই তার বাড়িতে শুরু হয় মাদকসেবীদের আনাগোনা। বর্তমানে তিনি হেরোইন ও ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
ভুক্তভোগী ইজিবাইক চালকের নাম নূর হোসেন। তিনি কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরুয়াপাড়ার বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার (৭ জুলাই) মধ্যরাতে মফিজুল তার তিন সহযোগীসহ জেলা শহরের বাসিন্দা নূর হোসেন নামে এক চালককে অজ্ঞান করে ইজিবাইক ছিনতাই করে নিয়ে যায়। স্থানীয় কিছু যুবক বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার রাতে মফিজুল ও তার সহযোগী মিজানুর রহমানকে (৩৬) আটক করে। পরে ভুক্তভোগী ইজিবাইকচালক নূর হোসেন ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করে। এলাকাবাসীর সামনে মফিজুল ও তার সহযোগী মিজানুর অটোরিকশা ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেন। মঙ্গলবার বিকালে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।
মফিজুল ও তার সহযোগী মিজানুর জিজ্ঞাসাবাদে স্থানীয়দের জানায়, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা যাত্রী বেশে শহরের পৌর বাজারের সামনে থেকে নূর হোসেনের ইজিবাইকে ওঠে। কিছু দূর গিয়ে একটি দোকনের সামনে দাঁড়িয়ে ইজিবাইক চালক নূর হোসেনকে ঘুমের ট্যাবলেটের গুড়া মিশ্রিত পান ও ফলের জুস খাওয়ায়। এরপর কিছুদূর যাওয়ার পর নূর হোসেন ঘুমে অচেতন হয়ে পড়লে তাকে সদরের পৌর এলাকার ডাকুয়াপাড়া গ্রামের একটি সড়কের পাশে ফেলে রেখে তারা ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে জোবায়ের নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে। জোবায়ের উলিপুর উপজেলার বাসিন্দা। তবে তিনি বেলগাছা ইউনিয়নে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে বলে জানায় ওই দুই অভিযুক্ত।
অভিযুক্ত মিজানুর বলেন, ‘আমি মফিজুলের মাদক বিক্রিকারী হিসেবে কাজ করি। মফিজুলের মাদক ব্যবসায় পুঁজি ঘাটতি হয়েছে। মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতে তার পরিকল্পনায় আমরা কয়েকজন মিলে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সিদ্ধান্ত নেই। জুস কেনা ও ঘুমের ওষুধ মেশার কাজ মফিজুল ও তার ভাগিনা সিরাজুল করছে। আর চালককে জুস খাওয়াইছে সিরাজুল।’
মফিজুলকে আটককারী যুবকদের একজন আতাউর বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে আমরা ছিনতাইকারীদের আটক করেছি। তাদের কাছে ইজিবাইকের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে আমরা পুলিশে খবর দিয়েছি। পুলিশ ইজিবাইক উদ্ধারের আশ্বাস দিয়ে ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে।’
সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আখতারুজ্জামান সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা মফিজুল ও মিজানুরকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে এসেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ছিনতাইকৃত ইজিবাইকটি উদ্ধারে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।