ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের সঙ্গীরা বিদেশিদের ওপর ভর করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু আমার বিশ্বাস- এতে কোনো লাভ হবে না, তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না। বরং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বর্তমান সরকারের অধীনে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে অনেক অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে- এটা যেমন ঠিক। তেমনি দুর্নীতি, দলীয়করণ, অর্থ পাচার, অনিয়ম, লুটপাট বন্ধ করতে না পারার ব্যর্থতাও আছে। বিশেষ করে খেলাপী ঋণের পরিমাণ অস্বাভাবিক গতিতে বেড়ে যাওয়া, ব্যাংক খাতে চরম অব্যবস্থাপনা, তারল্য সংকট, রিজার্ভ সংকট, রেমিট্যান্স কমে যাওয়া, বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি দেশের মানুষকে আশাহত করেছে। তার পরও আমরা মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী-জঙ্গিগোষ্ঠীর অপরাজনীতির বিপরীতে দাঁড়িয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।
সম্প্রতি দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে রাশেদ খান মেনন এসব কথা বলেন। তোপখানা রোডের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে তিনি দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এই নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী দলের অংশ নেওয়া-না-নেওয়া, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রায় ১৫ বছরের শাসনামলের সফলতা-ব্যর্থতা, ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে মতবিরোধ, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার প্রতিনিধিদের নানা তৎপরতা, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গসহ বিভিন্ন ইস্যুতে খোলামেলা কথা বলেন তিনি।
প্রশ্নকর্তা : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বেশি সময় বাকি নেই। আওয়ামী লীগসহ তাদের শরিকরা নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করেছে। বিএনপিসহ তাদের বলয়ে থাকা দলগুলো বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অনড়। তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলছে। আপনার কি মনে হয়, এর মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মেনন : নির্বাচন হবে সংবিধান মেনে। সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে কিভাবে, কোন পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের শরিকরা একবার নির্বাচন বর্জন করেছে। আরেকবার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আগামীতে তারা বলছে নির্বাচন বর্জন বা প্রতিহত করবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল যেমন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মুখে যাই বলুক না কেন-বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের শরিকরাও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তৃণমূলে খোঁজখবর নিলে এই বক্তব্যের সত্যতা মিলবে। বিএনপি-জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা যার যার নির্বাচনি এলাকায় নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছে। জামায়াত তো ঘোষণা দিয়েই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে এটাও ঠিক, বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের শরিকরা জানে যে, তারা ভোটের মাঠে সুবিধা করতে পারবে না। তাই তারা যে কোনো মূল্যে নির্বাচন পণ্ড করতে সবরকম চেষ্টা করবে। তারা আসলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নস্যাৎ করতে চায়। অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে দেশে একটি অসাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। দেশটাকে আবার পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালনা করাই তাদের আসল লক্ষ্য।
আমি মনে করি, বিএনপি ও তাদের শরিকদের দাবি অনুযায়ী নির্বাচনের আগে সংবিধান সংশোধনের মতো কোনো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনা নেবেন বলে মনে হয় না। জেনে বুঝে তো কেউ আর আত্মহত্যা করবে না। শেখ হাসিনার পদত্যাগের অর্থ হচ্ছে বিএনপিকে হাতে ধরে ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়া। এই ভুল আওয়ামী লীগ করবে না। অতএব একটা বিষয় পরিষ্কার, শেখ হাসিনার অধীনেই যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হয়তো নির্বাচনকে ঘিরে বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘাত সহিংসতার ঘটনা ঘটবে, নানামুখী চাপ থাকবে। তবে নির্বাচনটা হয়ে গেলে পরে আর কোনো সমস্যা হবে না।
প্রশ্নকর্তা : তাহলে কি বিএনপিসহ তাদের শরিকদের ছাড়াই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কী মনে হয় আপনার?
মেনন : আমার তো মনে হয় বিএনপিই নির্বাচনে আসতে চায় না। তারা বলছে, দলীয় সরকার অর্থাৎ শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না। আর শেখ হাসিনাও পদত্যাগ করবেন না। তাহলে তারা নির্বাচনে আসবেন না। আর না এলে তাদের ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে-এটা বাস্তবতা।
প্রশ্নকর্তা : নির্বাচন সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে। বিষয়টিকে আপনি কোন চোখে দেখছেন?
মেনন : তাদের মূল চাওয়া ‘রেজিম চেইঞ্জ’। এটা আমি সংসদেও বলেছি, সংসদের বাইরেও বলেছি। এশীয় প্রশান্ত মহাসগর এবং বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে মার্কিনিদের কিছু মহাপরিকল্পনা আছে। এই অঞ্চলে অনেক দিন ধরেই তারা সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে চায়। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে এটা তারা করতে পারবে না। তাই যে কোনো মূল্যে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায় মার্কিনিরা। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে এ দেশে নিজেদের পছন্দের একটি ‘হামিদ কারজাই’ মার্কা সরকার চায়। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সুশাসন কিংবা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন- এটা তাদের মূল কথা নয়। তাদের মূল চাওয়া বর্তমান সরকারকে উৎখাত করা। গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে তারা হস্তক্ষেপ করেছে। নির্বাচিত সরকার উৎখাত করেছে। আবার পাকিস্তানে তারা সামরিক বাহিনীকে সবসময় মদদ দিয়ে যাচ্ছে। সেখানে নির্বাচিত সরকারকে তারা উৎখাতে ভূমিকা রাখছে। তাই আমেরিকার মুখে আর যাই হোক গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের কথা শোভা পায় না।
প্রশ্নকর্তা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির প্রভাব কি পড়তে পারে আমাদের রাজনীতিতে?
মেনন : আমেরিকা তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির স্বার্থরক্ষায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন করে, প্রয়োগ করে থাকে। কাকে তারা তার দেশে আসতে দেবে, কাকে দেবে না, কাকে ভিসা দেবে, কাকে দেবে না-এটা সে ফ তাদের নিজস্ব বিষয়। তাদের যেমন ভিসা দেওয়ার অধিকার রয়েছে, না দেওয়ারও অধিকার রয়েছে। এ নিয়ে আমাদের কোনো দুশ্চিন্তা নেই। আমাদের ১৬ কোটি মানুষের এ নিয়ে ভাববার সময় নেই। বড় রাজনীতিবিদ, টাকা ওয়ালা রাজনীতিবিদ, টাকা ওয়ালা আমলা, টাকা ওয়ালা ব্যবসায়ী, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসৎ কর্মকর্তা-তাদের আগ্রহ এই ভিসানীতি নিয়ে। তারা আমেরিকায় ঢুকতে পারল কী পারল না, তাতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কিছু যায় আসে না।
আর সবচেয়ে বড় কথা আমেরিকা তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, তাদের দেশীয় রাজনীতির মূল্যবোধের মানদণ্ডে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করে থাকে। এটা রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট। তারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ অনুযায়ী বিভিন্ন রকম গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের মাপকাঠি তৈরি করে। কোথাও তারা সমালোচনামুখর, কোথাও আবার নীরব। কোথাও তারা নিষ্ক্রিয়। এক মুখে তারা গণতন্ত্রের কথা বলে, আরেক মুখে তারা খুনিদের পক্ষে কথা বলে। তারা খুনিদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়। সুতরাং আমি মনে করি, আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকা নিয়ে এত দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
প্রশ্নকর্তা : আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিরোধীপক্ষের বড় অভিযোগ হচ্ছে-তাদের প্রায় ১৫ বছরের শাসনামলে সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটেছে। খেলাপি ঋণ বেড়েছে, মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। সরকারের ঘনিষ্ঠ বড় বড় ব্যবসায়ীকে নানাভাবে অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। রিজার্ভ কমেছে। জোটের শরিক দল হিসাবে এর দায়ভার কতটা নেবেন?
মেনন : এটা ঠিক, প্রায় ১৫ বছরের শাসনামলে শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশে উন্নয়ন এবং অগ্রগতির একটি চমৎকার ধারা তৈরি করেছে। আবার এটাও ঠিক, এই দীর্ঘ সময়ে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটেছে। খেলাপি ঋণ বেড়েছে, মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। খাদ্যপণ্যের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। জোটের শরিক দলের নেতা হিসাবে সংসদে এবং সংসদের বাইরে আমরা এসব নিয়ে কথা বলেছি। এখনো বলছি। সমালোচনা করেছি। এটা ঠিক-দুর্নীতি, লুটপাট, দলবাজি, অর্থ পাচার আমাদের জন্য এটা একটা বড় সমস্যা। এগুলো উন্নয়নের ট্রেনকে এগিয়ে নিতে বাধাগ্রস্ত করছে। এখনো সময় আছে দুর্নীতি, অনিয়ম লুটপাট সামাল দিতে শক্ত হাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। বড় ব্যবসায়ী হোক আর ছোট ব্যবসায়ীই হোক-দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট এবং অর্থ পাচারের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
প্রশ্নকর্তা : নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কেন্দ্র করে একটি তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারও কারও মতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সামনে রেখে একটি মহল তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে চায়। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও এই অভিযোগ করছেন। আপনার কী মনে হয়?
মেনন : ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। কিন্তু তিনি আইনের ঊর্ধ্বে নন। শ্রম আদালতের একটি আমলায় তিনি আসামি। বিষয়টি আদালতে গড়িয়েছে। আদালতেই ফয়সালা হবে। তবে এটা ঠিক; কেউ কেউ হয়তো তাকে সামনে রেখে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। জাতীয় সরকারের নামে তৃতীয় একটি শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চাইছে। যদিও এতে লাভ হবে না। আমার জানা মতে, ড. ইউনূসকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সৃষ্টির মোক্ষম সময় ছিল এক-এগারো। যারা তখন এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তারা তখনই ব্যর্থ হন। আগামীতেও তাদের সবরকম অপচেষ্টা ব্যর্থ হবে। দুঃজনক বিষয় হচ্ছে, দেশে নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে একটি অপশক্তি মাতম শুরু করে।
প্রশ্নকর্তা : ১৪ দলীয় জোটের প্রধান দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপনাদের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে মনোকষ্ট রয়েছে। তার পরেও কি আপনারা এক সঙ্গেই পথ চলবেন?
মেনন : এটা ঠিক, আমাদের সঙ্গে কিছু বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। তার পরেও আমরা ১৪ দল দলগতভাবে শেখ হাসিনার সঙ্গে আছি, আগামী দিনেও থাকব। কারণ ১৪ দলীয় জোট একটি আদর্শিক জোট। এই জোটের হাত ধরেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শক্তি রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাংবিধানিক ধারা এবং গণতান্ত্রিক ধারাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে এগিয়ে নিতে আমাদের একসঙ্গে থাকা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। হত্যা-খুন ও গুমের রাজনীতির বিপক্ষে, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের অপরাজনীতির বিপক্ষে ১৪ দলীয় জোট অতীতে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে।
প্রশ্নকর্তা : সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করেছে, যার কিছু ধারা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। অবশেষে এটি বাতিল করে সাইবার সিকিউরিটি আইন করা হচ্ছে। এ নিয়েও সমালোচনা চলছে নানা মহলে। আপনার কি মনে হয়, আইনটি জনগণের স্বার্থেই করা হচ্ছে, নাকি ভিন্ন মত দমনে করা হচ্ছে?
মেনন : ডিজিটাল সমাজে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বাংলাদেশে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন দরকার, সাইবার সিকিউরিটি আইন দরকার। এটা মানতে হবে। নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এখানে কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে আলোচনা-পর্যালোচনা করে ঐকমত্যে পৌঁছানো যেতে পারে। তবে এই আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে যাতে খর্ব না করে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
প্রশ্নকর্তা : সম্প্রতি তিন বাম দলের শীর্ষ নেতারা চীন সফরে যান। আপনারা বর্তমান সরকারের পাশে থাকতে চীনের সহায়তা চেয়েছেন। এমন আলোচনা রয়েছে, সত্যিটা কী?
মেনন : চীন গত ৫০ বছরে আমাদের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বাইরে কোনো রাজনৈতিক তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত ছিল না। আমরা বামপন্থি। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক আছে। তাদের আমন্ত্রণে আমরা সেখানে গিয়েছি। এটা নতুন কিছু নয়। চীনের অভিজ্ঞতাকে আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কীভাবে কাজে লাগাতে পারি, তা নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়েছে। তবে চীন কখনো কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে না।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।