আয়কর সেবা মাস শুরু, কর অফিসেই সব সেবা


আয়কর রিটার্ন দাখিলসহ মেলার পরিবেশে করদাতাদের সব ধরনের সেবা দিতে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে কর তথ্যসেবা মাস। নভেম্বর মাসজুড়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের ৪১টি কর অঞ্চলের ৮৬৯টি সার্কেলে অফিস চলাকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে পাওয়া যাবে কর সেবা। গত চার বছরের মতো চলতি বছরেও আয়কর মেলা হচ্ছে না। সে কারণে প্রতিটি কর অঞ্চলে কর মেলার পরিবেশে মিনি করমেলার আয়োজন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর কর মেলা আয়োজন করে আসছিল এনবিআর। তবে ২০২০, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে আয়কর মেলা বন্ধ রয়েছে। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা মহামারি কারণে করমেলা বন্ধ রাখলেও বাড়তি খরচের বিবেচনায় এবারো আয়কর মেলা আয়োজনে না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। আয়কর তথ্য সেবা মাস উপলক্ষে গতকাল সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে এনবিআর। এর আগে এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান গণমাধ্যমে বলেন, আমরা আয়করদাতাদের অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে উৎসাহ দিতে চাই। ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সহজেই ঘরে বসে রিটার্ন জমা দেয়া যাবে। ফলে আর ট্যাক্স অফিসে যেতে হলো না, ব্যাংকে যেতে হলো না। সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যাবে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র। এবারো সরকারি কর্মচারীদের জন্য সচিবালয়ে রিটার্ন জমার বুথ বসাবে এনবিআর। যা চালু থাকবে ৩ থেকে ১৭ নভেম্বর। আর শেরেবাংলা নগরে সরকারি কর্মচারীরা এই সেবা পাবেন ১৯ থেকে ২৩ নভেম্বর। এবারো সেনা মালঞ্চে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের রিটার্ন জমা দেয়ার বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কর অঞ্চলগুলোতে যে সব সেবা পাওয়া যাবে আয়কর মেলার পরিবর্তে কর কমিশনার অঞ্চলগুলোতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে ও উৎসবমুখর পরিবেশে ৩ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন গ্রহণের জন্য করদাতাদের সেবা দেয়া। একই সঙ্গে প্রতিটি অফিসে উন্মুক্ত স্থান বা কার পার্কিং এরিয়ায় রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপন করে রিটার্ন গ্রহণের পরিবেশকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। একইসঙ্গে রিটার্ন দাখিলকারী করদাতাদের তাৎক্ষণিক প্রাপ্তি স্বীকারপত্রের সঙ্গে রিটার্ন দাখিলের জন্য উৎসাহ প্রদানে উপহার দেয়া হবে। এছাড়া অনলাইনে কীভাবে রিটার্ন দাখিল করা যায়, সে বিষয়টি হাতে কলমে দেখিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা থাকবে। অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করলে কর সার্টিফিকেট নেয়ার জন্য অফিস যেতে হবে না। এদিকে সব কর কমিশনার সেবা কেন্দ্রে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। একই সঙ্গে প্রতিটি কর অঞ্চলের নিজস্ব ওয়েবসাইট তথ্যসহ হালনাগাদ করতে হবে। ওই ওয়েবসাইটে আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন ফর্ম, পরিপত্র, রিটার্ন পূরণের নির্দেশিকা, ভিডিও টিউটোরিয়ালসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সন্নিবেশ করতে হবে। এছাড়া কর অঞ্চলগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখবে। অন্যান্য মাধ্যমের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চলবে। এছাড়া ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে জাতীয় ট্যাক্স কার্ড ও ঢাকার কর অঞ্চলগুলোর সেরা করদাতাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। অন্যদিকে ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের ৪টি কর অঞ্চলে কেন্দ্রীয়ভাবে ও অন্য সব কর অঞ্চল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় যথাযথ আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে জেলা ও সিটি করপোরেশনভিত্তিক সেরা করদাতা সম্মাননা প্রদান করবে।