ইসরাইলের ‘প্রস্তাব’ মেনে নিতে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র: হামাস


যুক্তরাষ্ট্র সরকার হামাসকে দখলদার ইসরাইলের প্রস্তাবিত একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেওয়ার জন্য চাপাচাপি করছে বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। হামাসের লেবানন প্রতিনিধি ওসামা হামদান শনিবার বৈরুতে এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়াশিংটনের পক্ষে থেকে চাপ সৃষ্টি করার এ অভিযোগ জানান। তবে তেলআবিবের দেওয়া ওই প্রস্তাবে হামাস গাজায় ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞ স্থায়ীভাবে বন্ধ করে উপত্যকা থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহারের যে শর্ত দিয়েছে, তা মেনে নেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। ওসামা হামদান বলেন, মার্কিন প্রশাসন ইসরাইলি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে অবিকৃত রেখে তা হামাসকে মেনে নেয়ার জন্য চাপাচাপি করছে। এটি হচ্ছে নিজের নোংরা চেহারাকে চাকাচিক্য করার লক্ষ্যে মার্কিন প্রশাসনের একটি অপচেষ্টা। তিনি বলেন, ইসরাইল গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় যে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়ে আসছে, তাতে সর্বাত্মক পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তেলআবিব দেশটির অস্ত্রের চালান না পেলে ইসরাইলকে বহু আগেই গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে হত। এ সময় যুদ্ধের ময়দানে ইসরাইলের পক্ষ অবলম্বন করা সত্ত্বেও, মার্কিন সরকার যুদ্ধবিরতির আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন হামাসের এই মুখপাত্র। হামদান বলেন, হামাস গাজায় যে যুদ্ধবিরতি চায়, সেটি হতে হবে স্থায়ী এবং উপত্যকা থেকে সব ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার গাজায় ফিলিস্তিনিদের আটক তার পণবন্দিদের মুক্ত করে নিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতি দিতে চায়। এর আগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সরাসরি বলে দিয়েছেন, পণবন্দিদের মুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধ শেষ হবে না বরং হামাসকে ‘ধ্বংস’ করার মধ্য দিয়ে গাজা আগ্রাসন বন্ধ হবে। তবে হামাসকে ধ্বংস করার এই হুমকি মেনে নিয়ে ইসরাইলি পণবন্দিদের মুক্ত করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন ওসামা হামদান। আর এ কারণেই গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা বর্তমানে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। তবে ভেতরে ভেতরে ইসরাইলের মনোবাসনা পূরণ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেটা এখন মোটেও অস্পস্ট নয় বলে দাবি করেন হামাসের এই প্রতিনিধি। শনিবার রাতে বৈরুতে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে হামদান আরও বলেন, আমরা আবার ঘোষণা করছি যে, আমরা যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আন্তরিক; তবে তা হতে হবে স্থায়ী এবং ইসরাইলের সব সেনা গাজা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। এরপরই দুপক্ষের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তি হবে, তার আগে নয়। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি হামলায় গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। সেইসঙ্গে গাজা ভূখণ্ডে চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে মোট মৃতের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৮৭৭ জনে পৌঁছেছে এবং আহত হয়েছেন আরও ৮৬ হাজার ৮৫৮ জন। সূত্র: মেহের নিউজ