এমপি হওয়ার পর বাড়ছে নজরুলের সম্পদ


আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে দুই মেয়াদে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন নজরুল ইসলাম চৌধুরী। নিজের ভাইসহ পরিবারের একাধিক সদস্য বিএনপি ও এলডিপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও নৌকা প্রতীকে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় তার। সংসদ সদস্য হওয়ার আগে ও পরে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দিন দিন বেড়েছে তার সম্পদের পরিমাণ। নগদ অর্থ, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ-সবকিছুই বেড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে কোটি কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করছেন নজরুল ইসলাম। কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে এমপির প্রভাবকে কাজে লাগান বলে অভিযোগ আছে। দলের নেতাকর্মীদের অনেকেই পুলিশি হয়রানি, নির্যাতন ও হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন গত ১৪ বছরে। ভিন্নদলের, ভিন্নমতের এবং আত্মীয়স্বজনদের গুরুত্ব দিতে গিয়ে তার হাতে নিগৃহীত হয়েছেন দলের অনেক ত্যাগী ও সাধারণ নেতাকর্মী। নির্যাতিত নেতারা এর মধ্যে আলাদা সমাবেশ করে এমপির বিরুদ্ধে ক্ষোভও ঝেড়েছেন। দলের সাধারণ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এবং নিজস্ব অনুসন্ধানে জানা গেছে, নজরুল ইসলাম চৌধুরীর বড় ভাই রফিকুল ইসলাম চৌধুরী ছিলেন কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির অর্থ সম্পাদক। আরেক ভাই নুরুল ইসলাম চৌধুরী ছিলেন কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন এই পদে। আরেক ভাই জসিম উদ্দিন চৌধুরী মন্টু ছিলেন পল্টন থানা বিএনপির সহসভাপতি। টিআর-কাবিখাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে চন্দনাইশে। কিন্তু এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন বা বরাদ্দ বণ্টনে উপজেলা আওয়ামী লীগ বা অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে খুব একটা সমন্বয় করেননি তিনি। আত্মীয়স্বজনসহ ঘনিষ্ঠ লোকদের দিয়েই তিনি এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন বলে দলের পদস্থ নেতারা অভিযোগ করেছেন। তার ভাগ্নে সাবেক যুবদল নেতা ও জোয়ারা ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান রোকন, আরেক ভাগ্নে কায়সার, সাবেক ছাত্রদল নেতা মুজিবুর রহমান, আরজু, ভাতিজা জাকির হোসেনসহ ঘনিষ্ঠ লোকদের দিয়েই পুরো চন্দনাইশে প্রভাব বিস্তার করেন। সূত্র আরও জানায়, চন্দনাইশে উন্নয়ন কাজের টেন্ডার, মাটিকাটা, পাহাড় কাটা নিয়ন্ত্রণে যাদের নাম জড়িয়ে আছে তাদের মধ্যে রয়েছেন-রোকন, কায়সার, আমিন, তছলিম, জব্বার, তৈয়ব আলী, জিকু, বদাইন্যা, সাইফুল, ফয়সাল প্রমুখ। এদের সবাই এলাকায় এমপির অনুসারী হিসাবেই এলাকায় পরিচিত। দলীয় নেতাকর্মী যারা বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ করেন তাদের বিভিন্ন সময়ে হেনস্তা করার কাজেও ব্যবহার করা হয় এদের। ১৫ আগস্ট হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে সশস্ত্র হামলার ঘটনাও ঘটে। ওই হামলায় চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ জুনু রক্তাক্ত হন। হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুর আলম বাবুল, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন সুজন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শিবলীসহ ২১ নেতাকর্মী মামলার আসামি হন। ২০১৪ সালে এমপির নিজের ইউনিয়নে মোজাফফর আহমদ নামে এক সাধারণ কৃষক খুন হন। জমির বিরোধে এমপির ভাতিজা জাকির হোসেনের নেতৃত্বে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জাকিরকে প্রধান আসামি করে ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি বিচারাধীন আছে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল ধোপাছড়িতে খোকা নামে এক ব্যক্তি খুন হন। খোকা এমপি নজরুল ইসলামের বিরোধী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। খোকা হত্যা মামলার আসামি হন ধোপাছড়ি ইউপির তৎকালীন চেয়ারম্যান মোরশেদ, হাসান মেম্বার ও নুর আলম মেম্বারসহ অনেকে। দলের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর অভিযোগ-১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভ করেন নজরুল ইসলাম চৌধুরী। নির্বাচনে বিপুল ভোটে পরাজিত হওয়ায় ১৯৯৬-২০১৪ সাল পর্যন্ত দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে জোরালো ভূমিকায় তেমন দেখা যায়নি তাকে। ২০০১ ও ২০০৮ সালে পরপর দুবার ইঞ্জিনিয়ার আফসার উদ্দীন আহমদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভ করেন। হেভিওয়েট প্রার্থী বিএনপির কর্নেল (অব.) অলি আহমদের বিপরীতে নির্বাচন করে হেরে যান ইঞ্জিনিয়ার আফসার। তবে সেই সময় অনেক আওয়ামী লীগ নেতাই তার (ইঞ্জি. আফসার) বিরোধিতা করেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে পরপর দুবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন নজরুল ইসলাম চৌধুরী। আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচিত হলেও তার কাছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পরিবর্তে নিজের ভাই-ভাগ্নে, আত্মীয়স্বজন, বিএনপি-এলডিপি, জামায়াতের লোকজনই হয়ে ওঠেন ‘অতি প্রিয়।’ চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ছিলেন ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা নাজিম উদ্দিন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে গিয়ে এলডিপি থেকে আওয়ামী লীগে আসা বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল জব্বার চৌধুরীর পক্ষে ‘নেপথ্যে’ কাজ করেছেন এমপি-এমন অভিযোগ নেতাকর্মীদের। তারা বলছেন, নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নিজের এলাকায় ইউপি নির্বাচন এবং উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী বিপুল ভোটে হারার নজির এর বড় প্রমাণ। উপজেলা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর এমপির ভাই বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন মন্টুকে ফুলের মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের নবাগত বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল জব্বার। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে (গত রোজার ঈদের পরপর) নাশকতা, হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি, জামায়াত ক্যাডার জসিম উদ্দিন জেল থেকে বের হয়ে এমপি নজরুলকে শুভেচ্ছা জানাতে যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ছবি দেখেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘এমপি নজরুল সাহেবের ওপর চন্দনাইশে আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা চরমভাবে ক্ষুব্ধ ও হতাশ। কারণ তিনি নৌকার টিকিটে নির্বাচন করে এমপি হলেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে ‘নেপথ্যে’ কাজ করেছেন। সরকার শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প দিলেও এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোনো সমন্বয় করেননি। আত্মীয়স্বজনদের দিয়েই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। অথচ চন্দনাইশে আওয়ামী লীগের অভিভাবক হিসাবে তার থাকার কথা ছিল। এখানে তার উলটো হয়েছে।’ চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘২০১৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাজিম উদ্দিনের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে বহু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী পুলিশি হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন। আমি নিজেও পুলিশের হামলার শিকার হয়েছি। আমিসহ ১৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। সেই মামলায় চার্জশিট দিয়েছে। অথচ এমপি সাহেব আমাদের জন্য কিছুই করেননি। তিনি এবং তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজন সবাই বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। ফলে নৌকার প্রার্থী হেরেছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী জিতেছেন। তিনি বিএনপি ও এলডিপির একজন সক্রিয় কর্মী আবু তৈয়বকে প্যানেল মেয়র বানিয়েছেন। সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বরাদ্দ-বণ্টনেও প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত করেন না এমপি। করেছেন স্বজনপ্রীতি।’ চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ জুনু বলেন, ‘এমপি নজরুল সাহেবের একগুঁয়েমির কাছে চন্দনাইশে আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা অসহায়। বিগত সাড়ে ৯ বছরে কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দলের উল্লেখযোগ্য কোনো নেতাকর্মীকে সম্পৃক্ত করেননি তিনি। এই সময়েও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অনেককে মামলার আসামি হতে হয়েছে। হামলার শিকার হতে হয়েছে নিজ দলের কর্মীদের হাতে। এটা কাম্য ছিল না।’ এমপি হওয়ার পর সম্পদ : ২০১৪ সালে এমপি নির্বাচিত হওয়ার আগে এবং এমপি হওয়ার পর ২০১৮ সালে নির্বাচন কমিশনে প্রদত্ত হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এমপি হওয়ার পর নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নগদ টাকা ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে। হলফানামায় দেখা গেছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তার হাতে নগদ ছিল সাড়ে চার হাজার টাকা মাত্র! তবে ২০১৮ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ পাঁচ বছরের ব্যবধানে তার নগদ টাকা বেড়েছে ৫২৭ গুণ! এই সময়ে তিনি হয়েছেন ৫০ লাখ টাকা দামের গাড়ির মালিকও। কেবল নগদ টাকা নয়, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি দুটোই বেড়েছে এই সংসদ সদস্যের। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে দেওয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী নজরুল ইসলাম চৌধুরীর অস্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য ছিল ৫৪ লাখ ৯ হাজার টাকা (নগদ সাড়ে চার হাজার টাকাসহ)। বন্ড, ঋণপত্র, তালিকাভুক্ত বা তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিতে বিনিয়োগ ছিল ৫১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। স্বর্ণ ও মূল্যবান অলংকার ছিল ২৫ হাজার টাকার। ২০১৮ সালে এসে তার অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ২৪ লাখ টাকায়। যার মধ্যে নগদ হচ্ছে ২৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। নজরুল ইসলাম চৌধুরীর ব্যবসায় মূলধন ও বিমার পরিমাণ ২০১৪ সালে ছিল ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ লাখ ২৩ হাজার টাকায়। এ খাতে ২০১৪ সালে স্ত্রীর ৮০ হাজার টাকা থাকলেও পাঁচ বছরের মাথায় এসে তা দাঁড়ায় ২৮ লাখ ৩২ হাজার টাকায়। একইভাবে স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৯২ লাখ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪০ হাজার টাকার সমপরিমাণ। পাঁচ বছরে তিনি ৮২ লাখ টাকার দায়ও শোধ করেছেন। সংসদ সদস্য হওয়ার পর তিনি ১৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা মূল্যের কৃষিজমির মালিক হয়েছেন। চট্টগ্রাম বন্দরে ঠিকাদারি : এমপির নজরুল ইসলাম চৌধুরীর মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘চৌধুরী সিন্ডিকেট চট্টগ্রাম বন্দরে কোটি কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করছে। সুইমিং ফুল নির্মাণ, বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করেছে এই প্রতিষ্ঠান। বন্দর-পতেঙ্গা আসনের সরকারদলীয় এমপি এমএ লতিফ বলেন, ‘এমপি নজরুল সাহেবের প্রতিষ্ঠান চৌধুরী সিন্ডিকেট চট্টগ্রাম বন্দরে ঠিকাদারি কাজ করে এটা ঠিক। কারণ তিনি আমার কাছেও একটি কাজের সুপারিশ নিতে গিয়েছিলেন। আমি অন্য ঠিকাদারদের অনুরোধ করে তাকে একটি বড় কাজ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেছিলাম। অবশ্য এরপর তিনি আর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।’ চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে টেন্ডারের শর্তপূরণ করে যেসব প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় নিয়ম-কানুন মেনেই তাদের মধ্যে যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানের মালিক এমপি না অন্য কেউ-তা বিবেচনা করার সুযোগ নেই। যা বললেন নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি : উল্লিখিত সব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি বলেন, দলের জন্য তিনি কী করেছেন না করেছেন তা সবাই জানে। আর যারা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তারা অতীতে কী করেছেন তাও সবাই জানে। তিনি শতভাগ স্বচ্ছতার মাধ্যমে এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। দলীয় লোকজনকে সম্পৃক্ত করেই করেছেন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বা আত্মীয়স্বজনকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া বা পরিবারতন্ত্রের যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তার কাছে অনেকেই আসেন। তার সঙ্গে অনেকেই ছবি তোলেন। কে খুনি কে সন্ত্রাসী সেসব যাচাই করার সুযোগ তার থাকে না অনেক সময়। তার কাছে কেউ এলে তাকে তিনি জোর করে বের করে দিতে পারেন না। এমপি নজরুল আরও বলেন, তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না। তাই নিজ দলের বা ভিন্ন দলের কাউকে তিনি এলাকাছাড়া করেননি। কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেননি। তবে কেউ যদি অপরাধ করে তারা হোক দলের বা দলের বাইরের, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে। চন্দনাইশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রয়েছে। পুরো জীবনটাই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য উৎসর্গ করেছেন বলে দাবি করেন। তবে চট্টগ্রাম বন্দরে নিজের ফার্মের নামে ঠিকাদারি ব্যবসা করা, এমপি হওয়ার পর সম্পদ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানার জন্য তার সেলফোনে এই প্রতিবেদক কল দিলে তিনি রিসিভ করেন। তবে তিনি বলেন, সঙ্গে আর কোনো কথা বলবেন না। ‘আপনি আমাকে আর ফোন করবেন না। যা ইচ্ছে লিখে দেন।’