‘এ প্রশ্নের জবাব আমি দেব না’, কেন বললেন সিইসি


গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) নতুন সংশোধনীর প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, \'আরপিও সংশোধনীর ফলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বেড়েছে।\' সোমবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন। ইলেকশনের পরিবর্তে আপনারা পোলিং শব্দটা এনেছেন। এ ক্ষেত্রে ৯১(এ) ইলেকশন শব্দটা ছিল সেখানেও পোলিং এনেছেন কিনা এবং ইলেকশন ও পোলিং এই দুটি শব্দের পার্থক্যটা কী জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, \'এগুলো আপনাদের চেয়ে আমাদের ভালো বোঝার কথা। কিছু মনে করবেন না। আমাদের লিগ্যাল সেল আছে। কোনটা ইলেকশন হবে, কোনটা পোলিং; ইলেকশন শব্দটা হচ্ছে জেনাস। ল\' তে যেটাকে জেনাস অ্যান্ড স্পিসি বলে, ইলেকশনের আন্ডারে পোলিং, পোলিংয়ের আন্ডারে কখনো ইলেকশন হয় না। একজন নির্বাচিত হলেন, ওনি পোল্ড হবেন না। ওনি নির্বাচিত হবেন আর পোলিং ওই প্রসেসটা। যে অংশে ভোটাররা গিয়ে ভোট দেবেন। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে পোলিং বলা হয়।\' সিইসি বলেন, এটাকে বিশাল করে দেখানোর চেষ্টা করেছে; নির্বাচন কমিশন তার পায়ে কুঠার মেরে ফেলেছে। নির্বাচন কমিশন ভুল করতে পারে কিন্তু কুঠার মারেনি। আমরা বলছি, আমরা সুচিন্তিতভাবে, চিন্তা-ভাবনা করে আমরা এটাকে কারেকশন করেছি। এখানে আসলে ইলেকশন হবে না, পোলিং হবে। আগামী ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনে নির্বাচন। এমন কোনো পরিস্থিতি আজকে হলো যে, মনে হচ্ছে নির্বাচন ১৭ জুলাই করার মতো পরিস্থিতি নেই, কমিশন আজকে চাইলে কি নির্বাচন বাতিল করতে পারে—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, \'এ প্রশ্নের উত্তর আমি দেব না।\' ভোট শুরুর আগে কমিশন ভোট বন্ধ করতে পারবে কিনা আবারো প্রশ্ন করা হলে সিইসি বলেন, \'নির্বাচনের আগের দিন ভূমিকম্প হয়ে ৫০ লাখ লোক মারা গেছেন কমিশনের কিছু ইনহেরেন্ট পাওয়ার আছে। পারবে না কেন! যদি প্রয়োজন হয় পারবে না কেন!\' \'অনিয়ম যদি হয়, নির্বাচনের আগে সেই অনিয়মের ডায়মেনশন দেখে আমাদের বিধান আছে অনিয়ম কে করেছে তদন্ত করতে হয়। অনিয়ম যিনি করেছেন তার প্রার্থিতা বাতিল করার সুস্পষ্ট বিধান আছে। সেই সময়টা খুব মার্জিনাল। সেই সময় যদি আমরা তদন্ত করে দায় নিরূপন করতে পারি কে অনিয়ম করেছেন তাহলে তার প্রার্থিতা বাতিল করে আমরা নির্বাচন চালিয়ে নিতে পারব। আর পোলিং-ইলেকশনের কারণে কোনো হেরফের হবে না। প্রচলিত বিধানের কারণেই আমরা তার প্রার্থিতা বাতিল করতে পারব,\' বলেন তিনি। নির্বাচন প্রক্রিয়ার যে কোনো পর্যায়ে ভোট বন্ধ করে দিতে পারবে কমিশন যদি প্রতীয়মান হয় যে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এখন ইলেকশন শব্দ বাদ দিয়ে পোলিং দেওয়াতে সাবেক ২ নির্বাচন কমিশনার বলেছেন কমিশন চাইলেও যদি মনে ভোট চালাতে পারবে না তবু ভোট বন্ধ করতে পারবে না—এ বিষয়ে হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, \'আমি কোনো হাইপোথিটিক্যাল রিপ্লাই দিতে যাব না। ওই ধরনের পরিবেশ হতে দিন।\' \'আমি আবারো বলছি, সুযোগ কোথায় নেই! সাধারণত কতগুলো বেঞ্চমার্ক দিয়ে দেয় এই এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন বন্ধ করতে পারবেন, এই এই পরিস্থিতিতে পারবেন না। তারপরও যদি এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হয়, যখন মনে হচ্ছে অসম্ভব, তখন কমিশন কেন পারবে না! এই গবেষণার প্রয়োজন হলো কেন আমি বুঝতে পারলাম না\' যোগ করেন তিনি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, \'আমরা ভোটের আগের দিনে যাচ্ছি না।\' গণমাধ্যমকর্মীরা আবার প্রশ্ন করেন, ভোটের আগে সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে ভোট বন্ধ করা হবে কোন আইনে—সিইসি বলেন, \'নতুন আইন ছুড়ে ফেলে দেন, এই আইন হয়নি। ভোটের আগের দিন যদি এ রকম কোনো পরিবেশ হয় ভোট আমরা বন্ধ করতে পারব কিনা সেটা ওই ধরনের পরিবেশ হলে তখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।\' আইনগতভাবে কমিশন এটা পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, \'আমরা স্পষ্ট করে বলছি, ৯১(এ) তে সেই ক্ষমতা রহিত হয়নি। আইনের বাইরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আছে। সেটিকে বলা হয় ইনহেরেন্ট পাওয়ার।\' \'ইলেকশনের মধ্যে যে পোলিং এসেছে, এটা যেহেতু আপনারা বোঝেন। আমরা আমাদের মতো করে বুঝেছি। আপনারা যেভাবে বুঝেছেন ওভাবেই বুঝতে থাকেন। আমরা কী করতে পারব সেটা আমরা জানি, আমরা বুঝি। এটা নিয়ে আপনারা যদি চিন্তা-ভাবনা করতে চান, চিন্তা-ভাবনা থাকেন,\' বলেন তিনি।