চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ৩০-৩৫ টাকা


ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে দাম কমে অর্ধেকে নেমেছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫২ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে মনপ্রতি পেঁয়াজের দাম ১ হাজার ৪০০ টাকার মতো কমে গেছে। আড়তদাররা এখন আমদানি মূল্যেও পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছে না। মূলত দুই কারণে পেঁয়াজের দাম কমছে, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির জন্য বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ মজুত। এখন পেঁয়াজ আমদানির খবরে তারা বাধ্য হয়ে এসব পেঁয়াজ বাজারে ছেড়ে দিয়েছে। ফলে পেঁয়াজের দাম কমছে। এদিকে কাঁচা বাজারে মাছ, মাংস ও সবজির দাম আকাশচুম্বি। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে এবং ভারতে পেঁয়াজ সংকট দেখা দেওয়ায় ডিসেম্বর পরবর্তী তিন মাস (৩১ মার্চ পর্যন্ত) বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ছিল। এরপর বাংলাদেশে অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়। রমজান শুরুর আগে তারা এর দাম আরেক দফা বাড়ায়। এখন মজুত বৃদ্ধি বা অন্য কারণে নয়, শুধু ভারত থেকে আমদানির খবরে মাত্র দুই দিনে অর্ধেকে নেমেছে পেঁয়াজের দাম। এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। তিন দিন আগে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ১১০ থেকে ১২০ টাকা ছিল। দেশি পেঁয়াজ ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা। ভারতীয় ভালোমানের পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৫ টাকায়। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫২ থেকে ৫৮ টাকায়। খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা বলছেন, যেসব পেঁয়াজ এখন পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ৮০ টাকার বেশি। প্রতি কেজি পেঁয়াজে ৩০ টাকার মতো লোকসান দিয়ে বিক্রি করছেন। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পেঁয়াজের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। পাবনাসহ বিভিন্ন জেলায় চার দিন আগে প্রতি মন পেঁয়াজ ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। এরপর থেকেই পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে। শুক্রবার প্রতি মন পেঁয়াজ ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পেঁয়াজের দাম কমলেও অন্য ভোগ্যপণ্যের দাম উর্ধ্বমুখী। সরকার নির্ধারিত দামে পাওয়া যাচ্ছে না খেজুর। শুল্ক কমানোর পরও বাজারে খেজুরের দাম মানভেদে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। সাধারণ মানের খেজুর প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ দাম বেড়ে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছুটা ভালোমানের খেজুর আজোয়া ও মরিয়ম মানভেদে কেজি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন সুপারশপে উন্নত মানের খেজুর তিন হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বেশকিছু ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি ছোলার ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৭৫ থেকে ৮০, ডাবলির ডাল ৭৫ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১১০, চিকন মসুর ডাল ১৩৫ থেকে ১৪০, মোটা দানার মুগ ডাল ১৪৫ থেকে ১৫০, চিকন মুগ ডাল ১৭০ থেকে ১৮০ ও খেসারি ডাল ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য পণ্যের মধ্যে খোলা আটা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, প্যাকেট আটা ৬৫ থেকে ৬৮, খোলা ময়দা ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর: চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে বেশি বেড়েছে মাছের দাম। কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতি কেজি পাবদা মাছ ৩৫০-৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তেলাপিয়া ও কই ৩০০ টাকা, শিং ৮০০-১০০০ টাকা কেজি, রুই মাছের কেজি ৪০০ টাকা, কাতল বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪২০ টাকায়। চিংড়ি ৬০০-৯০০ টাকা কেজি, শোল ৫০০-৬০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ইলিশ মাছ আকারভেদে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫০-১৪০০ টাকায়। স্থিতিশীল রয়েছে মাংসের দাম। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মুলা ৩০ থেকে ৩৫, শালগম ৪০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০, শসা ৬০, লতি ৮০, শিম ৫০ থেকে ৬০, বরবটি ৮০, পেঁপে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও গাজর বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি বেগুন জাতভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকা, ক্ষিরাই ৫০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ ৫০ থেকে ৭০ টাকা, আকারভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।