চোখে গুলি লেগে ঘাড় দিয়ে বের হয় মুয়াজ্জিনের, ৩ সন্তান নিয়ে বিপাকে স্ত্রী


কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে উত্তরা আজিমপুর রেল লাইনের পাশে একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন ও ফল ব্যবসায়ী তিন সন্তানের জনক আমিরুল ইসলামের (৪৫) চোখে গুলি লেগে ঘাড় দিয়ে বের হয় যায়। এতে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে স্ত্রী তানজিন আক্তার বিপাকে পড়েছেন। স্ত্রী তানজিন আক্তার জানান, নিজের বাড়ি ভিটা ছেড়ে ৫ বছর আগে উত্তরা আজমপুর আসি এখানে আমার স্বামী একটি মসজিদে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করেন। দেড় বছর আগে আমার স্বামী ফলের ব্যবসা শুরু করেন। তিনি সংসারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি ছিলেন। শ্রী তানজিন আক্তার বলেন, আমার স্বামী বাসা থেকে বের হয়ে দোকানের ফল কিনতে উত্তরখান যান। ফল কিনে বাসায় ফেরার পথে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও পুলিশের মাঝে সংঘর্ষ বাধে। সেই মুহূর্তেই আমার স্বামীর চোখে গুলি লেগে ঘাড় দিয়ে বের হয়ে যায়। তাকে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের স্ত্রী কেঁদে কেঁদে বলেন, আমার অবুঝ অসহায় মেয়ে তুয়া (৪) তুষা (২) ছেলে তুষার (দেড় বছর) তিন সন্তানের দায়িত্ব নিবে কে? তিনি বলেন, আমার স্বামী তো কোনো রাজনীতি করে নাই। সারা দিন হারভাঙা খাটনি করে সংসার চালাত। ব্যবসার পাশাপাশি উত্তরা আজিমপুর রেল লাইনের পাশে একটি মসজিদে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করেছেন। আল্লাহর রহমতে আমাদের সংসার সুন্দর চলছিল। এখন আমার সন্তানদের কি উপায় হবে আমি কোথায় যাবো? গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমিনুল ইসলামের চোখে গুলি লেগে ঘাড় দিয়ে বের হয়ে নিহত হয় । ২২ জুলাই রাতে নিজ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার সলিমপুর পশ্চিম পাড়ায় তার লাশ আনলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ২২ জুলাই রাতে জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।