ডালিম পেকে ফেটে গেলেও তুলতে পারছেন না লেবাননের কৃষকরা
অনলাইন নিউজ ডেক্স
গাছেই পেকে ফেটে গেছে ডালিম। কিন্তু ইসরায়েলি হামলায় সেগুলো আহরণ করতে পারছেন না লেবাননের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কৃষকরা। বিস্ফোরণের ধোঁয়ায় যেন মিলিয়ে যাচ্ছে ডালিমের স্বাদ আর ঘ্রাণ।
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাসবায়ার ডালিমের বাগানগুলোয় এখন ফসল তোলার সময়। কিন্তু এ বছর, কৃষকরা শুধু প্রকৃতির সঙ্গেই নয়, লড়ছেন যুদ্ধের আতঙ্কের সঙ্গেও। সীমান্তবর্তী এ এলাকায় প্রতিদিনের গোলাবর্ষণ তাদের জীবনকে করে তুলেছে ভীষণ অনিশ্চিত।
আবুধাবি ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ভায়েরিকে স্থানীয় ডালিম বিক্রেতা জামাল খায়ের আল দীন বলেন, আমরা এখন খুব ভোরে কাজে আসি। কারণ তখন গোলাবর্ষণ কম হয়। তবুও কাছের খিয়াম এবং মারজায়ুনের মতো এলাকাগুলো থেকে মাঝে মাঝে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসে। আগে পুরো জমিতে চাষাবাদ করতাম। এ বছর শুধু বড় গাছগুলোর ফলনের ওপর নির্ভর করছি।
জামাল খায়ের নামের এই লেবানিজ নাগরিক একজন অভিজ্ঞ কৃষক। তিনি বলেন, তারা তাদের জমি ছাড়বেন না, কারণ এটাই তাদের পূর্বপুরুষদের মাটি।
এই কৃষক বলেন, আমরা এখন খুব বিপদের মধ্যে আছি। কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা এই জমিতে কাজ করেছেন, আমরাও এই মাটিকে আঁকড়ে ধরে থাকব।
তিনি বলেন, শুধু ফসল তোলাই নয়, গোলাবর্ষণের কারণে ডালিম থেকে মোলাস তৈরি করাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আগে এই মোলাস বিদেশে রপ্তানি করা হতো। কিন্তু যুদ্ধের কারণে এখন বাজারে পাঠানোও বন্ধ হয়ে গেছে।
খায়ের আল দীন বলেন, ডালিমের রস থেকে মোলাস তৈরি করতে সময় লাগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিন্তু এখন এসব পণ্যের কোনো বাজার নেই। লেবাননের অভ্যন্তরেও বিক্রি কমে গেছে, আর বিদেশে পাঠানো সম্পূর্ণ বন্ধ।
যুদ্ধের মাঝেও লেবাননের হাসবায়ার কৃষকরা নিজেদের জমি ছাড়তে রাজি নন। কারণ, ডালিম তাদের কাছে শুধু ফসল নয়, বেঁচে থাকার সংগ্রামের প্রতীকও। তাদের প্রত্যাশা, একদিন এই সংকট কেটে যাবে এবং তারা আবার আগের মতোই তাদের ফসল বাজারে পাঠাতে পারবেন।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।