তেলের অভাবে রংপুরের ৭ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জেনারেটর বন্ধ


তেলের অভাবে বন্ধ রয়েছে রংপুরের সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জেনারেটর। এ কারণে লোডশেডিংয়ের সময় প্রায়ই বন্ধ থাকে অপারেশন। প্রায় সময় রাতে অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা। তারা বলছেন, বর্তমানে প্রচণ্ড গরমে এমনিতেই নাকাল জনজীবন। রোগীদের অনেকেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এমন পরিস্থিতি উত্তরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। রংপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রংপুরের পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ, গঙ্গাচড়া, পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারিভাবে জেনারেটর বরাদ্দ রয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প ব্যবস্থায় হাসপাতালের কার্যক্রম চালু রাখার জন্য এসব জেনারেটর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুই বছর ধরে জেনারেটরের তেলের বরাদ্দ বন্ধ হয়ে যায়। তাই বর্তমানে তেলের অভাবে বন্ধ রয়েছে জেনারেটরগুলো। এদিকে কর্তৃপক্ষ জানায়, দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় অধিকাংশ জেনারেটর বিকল রয়েছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা জানান, জেনারেটরের তেলের বরাদ্দ বন্ধ থাকার কারণে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। জরুরি অস্ত্রোপচারের সময় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করে অনুরোধ করা হয়। তবু অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকে না। কখনো অস্ত্রোপচারের মাঝপথেও বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়। বর্তমানে গরম বাড়ার সঙ্গে লোডশেডিংও বেড়ে গেছে। এতে রোগীদের নিয়েও দুর্ভোগে পড়তে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এ নিয়ে তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সরজমিন মিঠাপুকুর, পীরগাছা, কাউনিয়া ও তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্যান ও লাইটসহ ব্যবহƒত যন্ত্রপাতিও বন্ধ থাকে। রাতে বিদ্যুৎ গেলে মোবাইল ফোনের লাইট জ্বেলে রোগী ও স্বজনরা চলাচল করেন। শুধু রোগী ও স্বজন নন, চিকিৎসক-নার্সরাও হাতপাখা, কাগজের প্যাড দিয়ে বাতাস করেন। কেউ কেউ চার্জার ফ্যানও ব্যবহার করছেন। তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের। কারণ লোডশেডিংয়ের সময় প্রায়ই বন্ধ থাকে অস্ত্রোপচার। এছাড়া গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটারে মাতৃস্বাস্থ্য সেবা প্রকল্প ও রোগীর কাছ থেকে তেলের ব্যবস্থা করে একটি জেনারেটর চালানো হয়। পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বিশ্বেশ্বর চন্দ্র বর্মণ জানান, আগের জেনারেটর বিকল অবস্থায় রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে উপজেলা পরিষদ থেকে একটি জেনারেটর দেওয়া হয়েছে সেটিও তেল বরাদ্দ না থাকায় চালানো যাচ্ছে না। বরাদ্দ পেলে দ্রুত চালু করা হবে। রংপুরের সিভিল সার্জন ওয়াজেদ আলীর জানান, সরকারিভাবে তেলের বরাদ্দ না থাকায় আমরা জেনারেটর ব্যবহার করতে পারছি না। বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও এখন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। তবে হাসপাতালগুলোতে যাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়, সে বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।