ধসের ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্রের আরও চার ব্যাংক, ঝাঁকুনি ইউরোপেও


মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় ধসে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম বৃহত্তম ব্যাংক সিলিকন ভ্যালি ফিন্যান্সিয়াল গ্রুপ (এসভিবি)। এর জেরে চাপের মুখে রয়েছে আরও অন্তত চারটি ব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংক ধসের ঝাঁকুনি লেগেছে ইউরোপেও। ডয়েচে ব্যাংক, বাংকো সাবাদেলসহ ইউরোপের বেশ কিছু ব্যাংকের শেয়ার দরে ধস নেমেছে। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। যুক্তরাষ্ট্রের যে চারটি ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে সেগুলো হলো-ফার্স্ট রিপাবলিক, সিগনেচার ব্যাংক, প্যাকওয়েস্ট ব্যাংক করপোরেশন, ওয়েস্টার্ন অ্যালায়েন্স ব্যাংক করপোরেশন। এ ছাড়া আরও কিছু ব্যাংক ঝুঁকিতে রয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিক ঋণ ও বন্ডের সুদহারও বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকে রক্ষিত আমানত তুলে নিরাপদ আয়ের জন্য বন্ডে বিনিয়োগ শুরু করে। এতে করে আমানতে টান পড়ায় এসভিপি বুধবার তাদের কাছে বন্ড বিক্রি শুরু করে। এসভিপির কাছে বেশির ভাগই ছিল মার্কিন ট্রেজারি বন্ড, যার সুদহার ১ দশমিক ৯ শতাংশ। যদিও ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার এখন প্রায় ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। এতে করে দুই হাজার ১০০ কোটি ডলারের বন্ড বিক্রি করে এসভিপির লোকসান হয় ১৮০ কোটি ডলার। বন্ড বিক্রির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পরদিন বৃহস্পতিবার ২২৫ কোটি ডলারের সমমূল্যের ইকুইটি বিক্রির ঘোষণা দেয় এসভিবি। পরপর দুদিন ব্যাংকের এমন ধারাবাহিক সম্পদ বিক্রির খবরে গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে তারা দ্রুত আমানত তুলে নিতে থাকেন। এক দিনেই আমানতকারীরা চার হাজার ২০০ কোটি ডলার তুলে নেন এসভিবি থেকে। এতে করে ব্যাংকটির শেয়ারের দর ৬০ শতাংশ কমে গেলে মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্যাংকটি বন্ধ করে দেয়। ব্যাংকের সব আমানতের দায় নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এদিকে, এসভিবিতে ধসের জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আরও কিছু ব্যাংকে। এর মধ্যে ফার্স্ট রিপাবলিক, সিগনেচার ব্যাংক, প্যাকওয়েস্ট ব্যাংক করপোরেশন, ওয়েস্টার্ন অ্যালায়েন্স ব্যাংক করপোরেশন নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে বেশি। সিগনেচার ব্যাংকের শেয়ার দর এক দিনেই ২৩ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের পতনের খবরে ইউরোপের ব্যাংকিং শেয়ারসূচক ইউরো স্টকস ব্যাংকস ৪ শতাংশ নিচে নেমেছে। সবচেয়ে বেশি ৭ শতাংশ দরপতন হয়েছে ডয়েচে ব্যাংকের। একইভাবে বাংকো সাবাদেলের ৫ শতাংশ, সোসিয়েতে জেনারেলির ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, আইএনজি ব্যাংকের ৪ দশমিক ৮ শতাংশ দরপতন হয়েছে।