পরীক্ষা না দিয়ে পাশ, চ্যালেঞ্জে গিয়ে যা ঘটল


চলতি বছর প্রকাশিত এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার উত্তরপত্র চ্যালেঞ্জ করে ৮ হাজার ৮৭৫ পরীক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। তাদের মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ২২৪ পরীক্ষার্থী। ফেল থেকে পাশ করেছে ১ হাজার ১১০ জন। ফেল থেকে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে সাতজন। বাকি পরীক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে বিভিন্ন গ্রেডে। খাতা পুনঃনিরীক্ষার এ ফল মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ৯টি সাধারণ এবং মাদ্রাসা বোর্ডের প্রকাশিত পুনঃনিরীক্ষণের ফল বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফল এখনো পাওয়া যায়নি। এদিকে পরীক্ষা না দিয়েও এক বিষয়ে জিপিএ-৩.৫ পাওয়া চট্টগ্রামের বাঁশখালীর চাম্বল উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই দুই শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। জানা যায়, এসএসসির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে ২৮ ফেব্র“য়ারি নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ভুলক্রমে ওই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি ওই দুই শিক্ষার্থী। পরে তাড়াহুড়ো করে তারা পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে ততক্ষণে পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ১২ মে প্রকাশিত এসএসসির ফলাফলে দেখা যায়, তারা সেই বিষয়ে জিপিএ-৩.৫ পেয়েছে। এ নিয়ে ওই উপজেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিল। এ বিষয়ে গাফিলতির কথা স্বীকার করে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম বলেন, এতে যে বা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন বোর্ডে কতজনের ফল পরিবর্তন : ঢাকা বোর্ডে ২ হাজার ৭২৩ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এতে নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩৪ জন আর ফেল থেকে পাশ করেছেন ১২৭ পরীক্ষার্থী। চট্টগ্রাম বোর্ডে ফলাফল ৭৬ হাজার ৪২টি উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে আবেদন করে ২৮ হাজার ৩৫১ পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ২ হাজার ৬০ জনের বিভিন্ন গ্রেডে ফল পরিবর্তন হয়েছে। ফেল থেকে পাশ করেছে ১০২ জন এবং একজন নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে ১৬২ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ শিক্ষার্থী আর ফেল থেকে পাশ করেছে ৩ শিক্ষার্থী। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে ফল পরিবর্তন হয়েছে ৮৭৭ জন শিক্ষার্থীর। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৮৮ জন, ফেল থেকে নতুন করে পাশ ১৩৬ জন। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ফল পরিবর্তন হয়েছে ৫৮২ জনের। এর মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৪৩ জন। ফেল থেকে নতুন করে পাশ করেছে ৩৪ জন। যশোর বোর্ডে ২৮১ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৫ জন। ফেল থেকে নতুন করে পাশ করেছে ৫৯ জন। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে ৭৮১ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। ৭৭ জন নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ২০৪ জন ফেল থেকে পাশ করেছেন। ময়মনসিংহ বোর্ডে ৭৭৮ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০১ শিক্ষার্থী। ফেল থেকে পাশ করেছে ২৬৩ শিক্ষার্থী। সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ২৪৯ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১ জন। ফেল থেকে পাশ করেছে ৩৮ জন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের দাখিল পরীক্ষায় ৩৮২ জন পরীক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। ফেল থেকে পাশ করেছেন ১৪৪ জন আর নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৯ জন। এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, চলতি বছরে এসএসসির ফল পরিবর্তনের হার একটু বেশি। তবে শিক্ষার্থীদের আবেদনও বেশি ছিল। খাতা মূল্যায়নে শিক্ষকদের গাফিলতি ছিল বলে মনে করি। এ বিষয়ে তদন্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত করা হবে বলে জানান তিনি।