প্রাইভেট প্র্যাকটিস কমিয়ে গবেষণায় নজর দিন


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসাবিজ্ঞানে আরও গবেষণা চালানোর ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, তাঁর সরকার এ খাতে বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ দেবে। চিকিৎসকদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, যারা সরকারি চাকরি করছেন, তারা প্রাইভেট প্র্যাকটিস একটু কমিয়ে গবেষণার দিকে নজর দিন। গবেষণায় উৎসাহ দেওয়ার জন্য সরকার সবকিছু করবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার তাঁর কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ ও বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে ভাষণে এসব কথা বলেন। খবর বাসসের। তিনি বলেন, গবেষণা ছাড়া কোনো কিছুতেই উৎকর্ষ লাভ করা যায় না। বিজ্ঞানকে বঙ্গবন্ধুই বেশি গুরুত্ব দিতেন। ’৭৫-এর পর স্বৈরশাসকরা গবেষণায় গুরুত্ব দেয়নি। জাতির পিতা স্বাধীন দেশে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময়ই পরমাণু শক্তি কমিশন এবং বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত পরমাণু শক্তি কমিশন মানুষের স্বাস্থ্য পরিচর্যায় অত্যাধুনিক নিউক্লিয়ার মেডিসিনের প্রচলন করে। ২২টি নিউক্লিয়ার মেডিসিন সেন্টার থেকে ক্যান্সার, থাইরয়েডজনিত রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসা হচ্ছে। তিনি বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রও স্থাপন করেন, যে পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্যবিজ্ঞান গবেষণার ওপর আমাদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা চাই, গবেষণায় সবাই আরও বেশি মনোযোগী হবে। গবেষকদের কোনো অসুবিধা থাকলে তা কীভাবে দূর করা যায়, সে ব্যাপারে সরকারের সব সময় আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকারের মূল লক্ষ্য মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ সাধন ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন। আমাদের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা এক জায়গায় একটু পিছিয়ে আছি, তা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায়। তিনি চিকিৎসকদের গবেষণায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। সরকারপ্রধান বলেন, তাহলে দেশের মানুষ সুস্থ হবে, সবল হবে; তারা মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে। যেমন কৃষিতে গবেষণা করে আজকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এমনকি যে টিউলিপ ফুল শীতের দেশ ছাড়া হয় না, তাও বাংলাদেশে হচ্ছে। স্ট্রবেরিও চাষ হচ্ছে। এসবই গবেষণার ফসল। গবেষণা আমাদের জন্য নতুন ভাগ্য খুলে দেয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছি। আরেকটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চেষ্টা করেছিলাম দক্ষিণাঞ্চলে। কিন্তু সেখানে মাটি এত নরম যে প্রতিটি দ্বীপে অনুসন্ধান চালিয়ে আমরা দেখেছি। আসলে সেখানে করা বোধ হয় সম্ভব নয়। তবে দ্বিতীয়টাও আমরা পাবনার রূপপুরেই করতে পারব। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রীর উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, এটার কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা যেন দ্বিতীয়টার কাজ শুরু করতে পারি। এখন থেকে আমাদের সে প্রস্তুতি নিতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ মালেক এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব আলী হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।