বগুড়ায় গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ৫


বগুড়ায় আত্বীয়ের বাড়িতে বেরাতে এসে খালা ও ভাগ্নী গণধর্ষনের ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে কাহালু থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার সারে এগারোটার দিকে বগুড়া পুলিশ সুপারের কার্যাললে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। তিনি বলেন বগুড়ার কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের বাগইল গ্রামে খালা ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ভাগ্নীকে জোরপূর্বক গণধর্ষণ ও ডাকাতি ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় তিনি জানান, গণধর্ষণের স্বীকার খালা ও ভাগ্নি নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। গত ১২ জুলাই তারা বাসযোগে নিজ এলাকা রংপুরে যাচ্ছিলেন। বগুড়ায় এসে বাসটি নষ্ট হয়। রাত বেশি হওয়ায় ওই গার্মেন্টস কর্মী খালার এক সহকর্মী রব্বানীর অনুরোধে রাত ২টার দিকে উপজেলার পাইকর ইউনিয়নের কুশলিহার গ্রামে রাজ্জাকের বাড়িতে সারাদিন অবস্থানের পর রাত পৌনে ৮টার দিকে রংপুরের উদ্দ্যেশ্যে ভ্যানযোগে রওনা করেন। পথিমধ্যে পাইকড় ইউনিয়নের বাগইল গ্রামস্থ বড় পুকুর ব্রিজের নিকট পৌঁছা মাত্র গ্রেফতারকৃত আসামিরাসহ আরো অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন আসামি ভ্যানচালক রাজ্জাক ও বাদীনির কলিগকে চাকুর ভয় দেখিয়ে আটক করে রেখে খালা ভাগ্নীর নিকট থাকা নগদ ৭২ হাজার টাকা, একজোড়া কানের দুল ও একটি বাটন মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে খালাকে জোরপূর্বক খালা ও তার বোনের মেয়ে ১৫ বছর বয়সী ভাগ্নিকে অপহরণ করে। এর পর খালা (৩৯) কে উপজেলার বাগইল পশ্চিমপাড়া গ্রামস্থ জনৈক হাজী ওজি উদ্দিনের পুকুরের উত্তর পাশে পাড়ের উপর নিয়ে ধর্ষণ করে এবং ভাগ্নী (১৫) কে উপজেলার মহিষামুড়া হতে বাগইলগামী পাকা রাস্তার উত্তর ধারে জনৈক আহম্মেদ উদ্দিনের ফাঁকা জমি সংলগ্ন তালগাছের নিচে নিয়ে ধর্ষন করে। এসময় মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে পরলে তাদেরকে অপরিচিত একটি সিএনজিতে করে বগুড়ার সাতমাথায় এলাকায় এনে নারায়নগঞ্জের একটি গাড়িতে তুলে দেয়। এরপর বাদীনি ও তার ভাগ্নী অসুস্থ্য অবস্থায় ঢাকায় পৌছে চিকিৎসা নিয়ে একটু সুস্থ্য হয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কাহালু উপজেলার পাইকর ইউনিয়নের রাজ্জাকের বাড়িতে পৌছে সেখান থেকে কাহালু থানায় এসে ১৯ তারিখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। এরপর ১৯ তারিখ দিনগত রাতেই আসামীদের সনাক্ত করে উপজেলার বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামীদের গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাবাদে উল্লেখিত ঘটনা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো কুশলিহার গ্রামের আশরাফ আলী ফকিরের ছেলে আবুল কাশেম মানিক (৩৫), বাগোইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক এর ছেলে মোহাম্মদ রাকিব হাসান (২৩), বাগোইল উত্তরপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ শাকিল হোসেন (২৩), একই গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আতিক হাসান প্রান্ত (২২) এবং কুশলিহার পূর্ব পাড়ার মোস্তফা ফকির ওরফে মোস্তা ফকিরের ছেলে মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান হাবিব (২৫)। পুলিশ সুপার আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে কাহালু থানায় ডাকাতিসহ গণধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে উপস্থিত করিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত অন্য আসামীদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ সুপার জানান।