বাঁধের পানি ছাড়ার কারণে বাংলাদেশে বন্যা হয়নি : ভারত


ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এসব জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃষ্টিও অব্যাহত আছে। অভিযোগ উঠেছে, ভারতীয় বাঁধ থেকে পানি ছাড়ার কারণে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে ভারতের দাবি, বাঁধের পানি ছাড়ার কারণে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি করা হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা বাংলাদেশে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখেছি যে ত্রিপুরার গোমতী নদীর উজানে ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তের জেলাগুলোতে বন্যার বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বাস্তবে এটি সঠিক নয়। ‘‘আমরা উল্লেখ করতে চাই যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে এই বন্যা মূলত বাঁধের ভাটির দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে ঘটেছে।’’ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘‘ডাম্বুর বাঁধটি বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১২০ কিলোমিটারেরও বেশি উজানে অবস্থিত। এটি একটি স্বল্প উচ্চতাবিশিষ্ট (প্রায় ৩০ মিটার) বাঁধ যা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে একটি গ্রিডে পাঠায় এবং সেখান থেকে বাংলাদেশও ত্রিপুরা থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎশক্তি গ্রহণ করে। প্রায় ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীপথে অমরপুর, সোনামুড়া ও সোনামুরা ২-এ তিনটি স্থানে আমাদের জলস্তর পর্যবেক্ষণ সাইট রয়েছে। ‘‘সমগ্র ত্রিপুরা ও এর পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের জেলাগুলোতে ২১ আগস্ট থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ভারী প্রবাহের এই ঘটনায়, পানির স্বয়ংক্রিয় মুক্তকরণ পরিলক্ষিত হয়েছে। অমরপুর স্টেশন একটি দ্বিপাক্ষিক প্রটোকলের অংশ যার অধীনে আমরা বাংলাদেশে বন্যার তাৎক্ষণিক তথ্য প্রেরণ করছি।’’ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে, ‘‘২১ আগস্ট বিকাল ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশে সরবরাহকৃত তথ্যে ক্রমবর্ধমান প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। সন্ধ্যা ৬ টায়, বন্যার কারণে, বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটার ফলে যোগাযোগের সমস্যা দেখা দেয়। তবুও, আমরা জরুরী ভিত্তিতে তথ্য পাঠানোর জন্য তৈরি অন্যান্য মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদীতে বন্যা একটি যৌথ সমস্যা যা উভয় পক্ষের জনগণের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি করে এবং এর সমাধানের জন্য ঘনিষ্ঠ পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’’ ‘‘যেহেতু দুটি দেশের ৫৪টি অভিন্ন আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে, তাই নদীর পানি-বিষয়ক সহযোগিতা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত আলোচনার মাধ্যমে পানি সম্পদ ও নদীর পানি ব্যবস্থাপনার সমস্যা ও পারস্পরিক উদ্বেগসমূহের সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’