বাড়তে পারে বৃষ্টি, কমবে তাপপ্রবাহ


টানা এক মাস দাবদাহের পর বৃহস্পতিবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বস্তির বৃষ্টি নামে। আগামী চার-পাঁচ দিন বৃষ্টির প্রবণতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এতে তাপমাত্রাও কমবে। তীব্র গরমে যখন জনজীবন বিপর্যস্ত, তখন এমন খবরে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তবে এ সময় শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এতে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের জনজীবনে কিছুটা প্রশান্তি ফিরলেও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ। সিলেটে বন্যার আশঙ্কায় বোরো ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক। শুক্রবারও চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে। শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তাপপ্রবাহের বিষয়ে জানানো হয়, রাজশাহী, পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় এই তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় দেশের পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- চট্টগ্রামে লোডশেডিং চলছেই: টানা কয়েক দিন অসহনীয় গরমের পর চট্টগ্রামে একপশলা বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ও গভীর রাতে বজ্রসহ বৃষ্টি হয় নগরী ও বিভিন্ন উপজেলায়। তবে বৃষ্টিতে নগরবাসীর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এলেও লোডশেডিং থেকে রেহাই মিলছে না। বৃহস্পতিবার রাতেও কয়েক দফা লোডশেডিং চলে। সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে বিভিন্ন উপজেলায়। পিডিবি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল কিছুটা কম। ফলে লোডশেডিং ছিল। এছাড়া ঝড়ের কারণে কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখতে হয়েছে। সিলেটে বন্যার আশঙ্কায় কৃষক: বিভাগের প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি মাঝেমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও বন্যা সৃষ্টির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তার পরও হাওড়াঞ্চলের বোরো ফসল নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা। প্রশাসনের সতর্কতা ও নির্দেশনা অনুসারে দ্রুত ফসল ঘরে তুলছেন তারা। ১৯টি পয়েন্টে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি শুক্রবার উজানে কমেছে, বেড়েছে ভাটিতে। সুনামগঞ্জে ভাটি সুরমার পানি বৃহস্পতিবার ছিল ৪ দশমিক ১৪ মিটার। শুক্রবার সকালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৬১ মিটারে। আর উজানে কানাইঘাটে সুরমার পানি সকালে ছিল ১১ দশমিক ১৩ দুপুরে তা দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৩ মিটারে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ২: জেলায় শুক্রবার তাপমাত্রার পারদ ওঠে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১১ শতাংশ। আবহাওয়া অফিস বলছে, এ মাসের ৫-৬ তারিখে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভোলায় ঝড়ো বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন: জেলায় শুক্রবার সন্ধ্যায় টানা ৪০ মিনিট ঝড়-বৃষ্টি আর বজ্রপাত হয়েছে। তীব্র গরমে বৃষ্টি কিছুটা স্বস্তি দিলেও ঝড়ে জেলার প্রধান সড়ক বক্সেরআলী পোল, আলীনগর, বেপারীবাজার এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউছুফ জানান, ঝড়ে অনেক স্থানে বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লাইন মেরামত করা হচ্ছে।