জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, ড. ইউনূসের বিচার চলছে। আমাদের এ প্রসঙ্গে কথা নেই। বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটন, বান কি মুনসহ বিশ্ববরেণ্য ১৭৫ জন নেতার মধ্যে ১০৪ জন নোবেল বিজয়ী বিবৃতি দিয়েছেন ড. ইউনূসের পক্ষে।
জিএম কাদের বলেন, বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিদের বক্তব্যে বিচার বিভাগীয় হয়রানির অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাদের বিচার-বুদ্ধি বা সততা সম্পর্কে কোনো সন্দেহ বা কটাক্ষ করা হাস্যকর। তারা বিচার বিভাগীয় হয়রানির কথা বলেছেন, এটি সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববরেণ্য নেতাদের বিবৃতি খতিয়ে না দেখলে জাতিকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে। বিশ্ব সমাজে আমাদের হেয়প্রতিপন্ন হতে হবে। এজন্য হয়তো জাতিকে চড়া মূল্য দিতে হবে। বিশ্ববরেণ্য ওই সব মানুষের বিচার, বুদ্ধি, বিবেক ও সততা নিয়ে কটাক্ষ করা বিশ্বে আমাদের হাস্যকর করে তুলছে।
জিএম কাদের বলেন, আমরা যদি মনে করি উটপাখির মতো মাথা গুঁজে বালুতে কিছু লুকিয়েছি, আমি কাউকে দেখিনি তাই কেউ আমাকেও দেখছে না। উটপাখির মতো মনে করলে চলবে না, সবাই আমাদের দেখছেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতি সভাপতি এইচএম শাহরিয়ার আসিফের রোগমুক্তি কামনায় অনুষ্ঠিত দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা প্রতিবেদন করেছে, নীরবে ধ্বংস করা হচ্ছে একটি দেশের গণতন্ত্র, কাঠগড়ায় মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ। নিউইয়র্ক টাইমসের সেই প্রতিবেদনেও বিচারিক হয়রানির কথা বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিবেদনে গণতন্ত্রহীনতার কথা বলা হয়েছে। গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে বর্তমান সরকার কাজ করছে। নিউইয়র্ক টাইমসকে বিশ্বের এক নম্বর গণমাধ্যম বলা হয়ে থাকে। তাদের যে কোনো প্রতিবেদন সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য।
জিএম কাদের বলেন, দেশের মানুষ, সরকার ও বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলে নিউইয়র্ক টাইমস এ প্রতিবেদনটি করেছে। সারা বিশ্ব যে পত্রিকাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে, আমরা তাকে মূল্য না দিলে তাতেও আমাদের খেসারত দিতে হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র ধংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, সব ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে ন্যাস্ত করা হয়েছে। এটাকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি, না হলে জাতি হিসেবে বড় ধরনের মাশুল দিতে হবে।
জিএম কাদের বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে প্রকাশ, সরকার নির্বাচনের আগে বড় বড় পদে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিব পদে অনেককে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এতে আমাদের আপত্তি নেই।
তিনি বলেন, তবে গণমাধ্যম বলছে, সরকার একটি শ্রেণীকে সুযোগ-সুবিধা দিতেই পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। তাদের কোনো কাজ নেই, নিজেদের কাজই করবে তারা। দেশে এমনিতেই অর্থের অভাব, সরকার যে রাজস্ব আদায় করছে তাতে হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এত পদোন্নতিতে সার্ভিস আরও খারাপ হবে। লোকজন বেশি হওয়ায় কাজ আরও খারাপ হবে। সরকারের উদ্দেশ্য সৎ নয়, উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনে জিততে হবে। সরকার পদোন্নতি দিয়ে জনগণের পয়সায় নির্বাচন প্রভাবিত করতে চায়।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় শাসন চালু করেছে। প্রশাসনকে ধ্বংস করেছে, অন্য কারো এ প্রশাসন দিয়ে দেশ চালানো কঠিন হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে সরকার। আগামীতে অন্য কোনো সরকার এলে তাদের খুবই খারাপ অবস্থার মুখোমুখি হতে হবে। মাদকের বিস্তার ঘটিয়ে সরকার দেশের তরুণ সমাজ ধ্বংস করেছে। পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংস করেছে বর্তমান সরকার।
তিনি বলেন, আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি ধ্বংস ও বিপর্যস্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে যাচ্ছি। আমাদের দায় আছে, রাজনৈতিকভাবে আমরা এর বিরোধিতা করেই যাব। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি ভালো সমাজ উপহার দিতেই আমাদের রাজনীতি।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, উপদেষ্টা সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম ওমর, খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ ইয়া চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব আমির হোসেন ভূঁইয়া, বেলাল হোসেন, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হেলাল উদ্দিন, হুমায়ুন খান, ওলিউল্লাহ মাসুদ, সুলতান মাহমুদ, এমএ রাজ্জাক খান, গোলাম মোস্তফা প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।