বুরকিনা ফাসোতে সম্ভাব্য জঙ্গি হামলায় শত শত মানুষ নিহত


পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে সম্ভাব্য জঙ্গি হামলার ঘটনায় শত শত মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওই অঞ্চলের এক কর্মকর্তার ধারণা, নিহত মানুষের সংখ্যা ৫০০ জনেরও বেশি হবে। নিহতদের স্বজন ও আহতদের সঙ্গে কথা বলা এক ব্যক্তির বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার দেশটির উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় শহর বারসালোঘো বাসিন্দারা হামলা থেকে শহরকে রক্ষা করতে এর চারপাশে পরিখা খুঁড়ছিল, তখন সন্দেহভাজন জঙ্গিরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এক দশক আগে প্রতিবেশী মালি থেকে আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সম্পর্কিত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো বুরকিনা ফাসোতে আসার পর থেকে এটি অন্যতম প্রাণঘাতী হামলা। জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো আসার পর থেকে সাহেল অঞ্চলের দেশ বুরকিনা ফাসো নিরাপত্তা সংকটে পড়েছে। এই নিরাপত্তা সংকটকে কেন্দ্র করে ২০২২ সালে দেশটিতে দুইবার সশস্ত্র অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার হামলার নিন্দা করলেও ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন তা জানায়নি। শত শত আহত মানুষকে বারসালোঘো থেকে সরিয়ে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে কায়া শহরের হাসপাতালগুলোতে পাঠানো হয়েছে। এক কর্মকর্তা বলেছেন, হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০০ জনেরও বেশি হতে পারে। মঙ্গলবার টেলিফোনে ওই কর্মকর্তা বলেন, বুরকিনা ফাসোর সেনারা বারসালোঘোর অনিচ্ছুক বাসিন্দাদের তাদের দৈনন্দিন কাজ রেখে শহরের চারদিকে পরিখা খোঁড়ার কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন। বিদ্রোহীদের বাধা দিতে পরিখাটি খোঁড়া হচ্ছিল। কায়ার হাসপাতালে থাকা আহতদের উদ্ধৃত করে তিনি জানান, সন্দেহভাজন জঙ্গিরা যখন হামলা চালায় তখন শহরের চারদিকে কয়েক হাজার মানুষ কাজ করছিল। তিনি বলেন, তারা একজনের ওপর আরেকজন শুয়ে পড়া ছাড়া কিছুই করতে পারেনি। বন্দুকধারীরা কাছেই লাকড়ি জাগাড়রত নারীদেরও গুলি করেছে। রাজধানী ওয়াগাদুগুতে থাকা বারসালোঘোর বাসিন্দাদের স্বজনরা রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে অথবা পরে জখম নিয়ে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করা সবাইকে ধরে নিহতের সংখ্যা অন্তত ৪০০ জন হবে। তারা জানিয়েছেন, কায়া ও ও ওয়াগাদুগুর হাসপাতালগুলোতে শত শত আহতকে ভর্তি করা হয়েছে। আনুমানিক এসব মৃত্যুর সংখ্যা রয়টার্স স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী বারসালোঘোর বাসিন্দাদের জোর করে পরিখা খোঁড়ার কাজে লাগিয়েছিল। যারা তাদের কথামতো কাজ করতে রাজি হয়নি তাদের পেটানো হয়েছিল। এ রক্তপাতের জন্য কোনো গোষ্ঠী সরাসরি দায় স্বীকার করেনি। আল কায়েদার অনুগত জামা নুসরাত উল-ইসলাম ওয়া আল-মুসলিমিন জানিয়েছে, শনিবার (২৪ আগস্ট) তারা বারসালোঘোর সম্ভাব্য সেনা সদর দপ্তরের দখল নিয়েছে।