বৈশ্বিকভাবে জ্বালানির দাম কমলে দেশেও কমবে: তৌফিক-ই-ইলাহী


প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মূল্য হ্রাসের প্রবণতা আরও কয়েক মাস অব্যাহত থাকলে স্থানীয় বাজারেও গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম কমে আসবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ আয়োজিত ‘এমপাওয়ারিং বাংলাদেশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানির মূল্য অস্থিরতা এবং এলএনজি আমদানির কারণে বাংলাদেশে এর প্রভাবের কথা বলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ গত ১৮ জানুয়ারি শিল্প খাতে গ্যাসের দাম ১৭৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ায়। চলতি বছরের শুরু থেকে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দামও তিন দফায় ১৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। চলমান সেচ ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়িয়েছে, যা বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সহায়তা করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি সামনের দিনে জ্বালানির বৈশ্বিক বাজারে প্রভাব না ফেললে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি এখনকার মতোই ভালো থাকবে, বলেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা। তার মতে, এই যুদ্ধের অবসান না হলে বিদ্যুতের দাম কমানো সম্ভব নয়। বিদ্যুতের দাম নির্ভর করে জ্বালানির ওপর। আমরা দেশে খুব অল্প পরিমাণ জ্বালানি উৎপাদন করি। আমরা জ্বালানির জন্য আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। দামটা স্থিতিশীল না হলে ভবিষ্যতে এটি কী হবে না হবে বলা কঠিন। দাম একবারে বেশি পরিমাণে বাড়লে মানুষের সমস্যা হতে পারে। তাই অল্প অল্প করে বাড়ানো হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, কিছু দিন আগে ডলারের বাজার কিছ্টুা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশ এখন ডলার সংকট কাটিয়ে উঠছে। জ্বালানি আমদানিতে এখন আর তেমন সমস্যা হচ্ছে না। গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান প্রসঙ্গে তৌফিক ই ইলাহী বলেন, কনকো ফিলিপস চলে গেল দামের ইস্যু তুলে। আমরা পসকো দাইয়ুকে ডেকে এনেছি। এখন এক্সন মবিল আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমার মনে হয় ওরা কৌশলগত কারণে আসতে চায়। এ বছরের মধ্যে কিছু একটা হতে পারে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপাতত কয়লা উত্তোলনের কোনো পরিকল্পনা নেই। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তুলতে হবে। কয়লার ওপরে পানির স্তর রয়েছে। এই পানির স্তর বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। এর সঙ্গে কয়লা উত্তোলনের জন্য প্রচুর জমি দরকার হয়। খনি এলাকার মাটি উর্বর উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার বিষয়গুলো বিবেচনা করছে। তিনি বলেন, আমরা ভাগ্যবান অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো আছি। সাউথ আফ্রিকা, ব্রিটেনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে। আমরা তাদের তুলনায় ভালো আছি। এফইআরবির চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ((ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান, ঢাকা ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমির আলী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জ্বালানি সাংবাদিকদের সংগঠন এফইআরবির প্রকাশনা ‘এমপাওয়ারিং বাংলাদেশ’-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।