বোয়িং বিক্রি ও নিউইয়র্ক ফ্লাইট নিয়ে আলোচনা


বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সোমবার বেবিচকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আকাশপথের নিরাপত্তা, ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়। পিটার হাসের নেতৃত্বে বোয়িং টিম এ সময় বেবিচক চেয়ারম্যানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি নতুন মডেলের ড্রিমলাইনার বিক্রির প্রস্তাব দেয়। বেবিচক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান ও রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ঢাকা-নিউইয়র্ক রুট চালুর বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা চান বেবিচক চেয়ারম্যান। রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ সময় বিমানের কাছে বোয়িং কোম্পানির ড্রিমলাইনারের নতুন ভার্সন ৭৮৭-১০ বিক্রির বিষয়ে প্রস্তাব দেন পিটার হাস। এছাড়া আকাশপথের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা ও বেবিচকের ক্যাটাগরি-১ এর উন্নয়নে নেওয়া উদ্যোগের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় পিটার হাস বলেন, এভিয়েশন সেক্টরের নিরাপত্তা ও নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর বিষয়ে ওয়াশিংটন-ঢাকা একসঙ্গে কাজ করবে। বৈঠক প্রসঙ্গে এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানান, বৈঠকে বিমানের নিউইয়র্ক রুট চালু ও নিরাপত্তার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মতে, ইতোমধ্যে বেবিচকের সক্ষমতা বেড়েছে, পরিধিও বেড়েছে। এই মুহূর্তে ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর বিষয়ে শতভাগ প্রস্তুতও বেবিচক। পিটার হাসের আরও বোয়িং ক্রয়ের প্রস্তাব প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, প্রস্তাবের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে উড়োজাহাজ কেনার বিষয়টি যেহেতু বেবিচকের আওতায় নয়, তাই বোয়িং-এর প্রস্তাবের বিষয়টি নিয়ে বেশি আলোচনা হয়নি। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) ২০০৯ সালে দ্বিতীয় ক্যাটাগরির নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে চিহ্নিত করে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অথরিটি (এফএএ)। মূলত ফ্লাইট নিরাপত্তায় দুর্বলতার কারণ দেখিয়ে এটি করে এফএএ। এফএএর ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র না থাকায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারছে না। এছাড়া বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ার ২-৩ বছরের মধ্যে পুনরায় ফ্লাইট চালু করতে না পারায় নতুন করে বেবিচক, শাহজালাল ও বিমানকে এফএএ থেকে ক্যাটাগরি-১ এর ছাড়পত্র নিতে হবে। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিমের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি টিমের সঙ্গেও বৈঠক করেন পিটার হাস। বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে পিটার হাসের সঙ্গে বোয়িং কোম্পানির একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের একজন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিমানকে বোয়িংয়ের পক্ষ থেকে ড্রিমলাইনারের নতুন মডেলের ৭৮৭-১০ এয়ারক্রাফট কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বাংলাদেশ বিমানের বহরে বর্তমানে বোয়িং কোম্পানির ১৬টি উড়োজাহাজ রয়েছে। এসব বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ ও স্পেয়ার পার্টস সংক্রান্ত আলোচনাও হয় ওই বৈঠকে। এদিকে আগামী বছরের মার্চে বিমান, শাহজালাল বিমানবন্দর ও বেবিচকের ক্যাটাগরি-১ সংক্রান্ত উন্নয়নের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে এফএএ অডিট টিম ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। জানা গেছে, ওই অডিট রিপোর্টের ওপর নির্ভর করছে ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইটের ঘোষণা। বেবিচকের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ক্যাটাগরি উন্নীতের জন্য ফার্স্ট অডিটের রেজাল্ট আমাদের অনুকূলে আছে। ফার্স্ট অডিটের পর এফএএ আরও কিছু শর্ত ও কাজ করতে বলেছে। ওই কাজগুলোও শেষ। ইতোমধ্যে আইকাও (ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন) অডিটে বেবিচক শতভাগ সফলতা অর্জন করেছে। আগামী মার্চে সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে এফএএ টিম অডিট করবে। আশা করা যাচ্ছে, ওই অডিটে ক্যাটাগরি পরিবর্তনের সুসংবাদ পাওয়া যাবে।