মালয়েশিয়ায় কাজ করেও বেতন নেই, অনাহারে ৩৬ বাংলাদেশি


মালয়েশিয়ায় কাজ করেও বেতন নেই, অনাহারে ৩৬ বাংলাদেশি কর্মী! বেতন চাইতে গেলে দেই দিচ্ছি করে সময় পার করছে মালিক পক্ষ। গত ৫ মাস কাজ করার পর বেতনের আশায় অনাহারে অর্ধাহারে দিন পার করছেন চলমান কলিং ভিসায় মালয়েশিয়ায় আসা ৩৬ বাংলাদেশি কর্মী। এই ৩৬ জন কর্মী ছাড়াও দেশটিতে যাওয়া বিভিন্ন কোম্পানির কর্মীদের সঙ্গে এমন ঘটনাই ঘটছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা, ওভারটাইম, ছুটির দিনে তিনগুণ কাজ করেও বেতন পাচ্ছেন না তারা। বেতন পাওয়ার আশায় কেউ সাহস করে প্রতিবাদ করছেন আবার কেউ বা তা নীরবে সয়ে যাচ্ছেন। হুকুমের গোলাম হয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৯ জুন মালয়েশিয়া পাড়ি জমান এই ৩৬ বাংলাদেশি কর্মী। মো. আব্দুল আউয়াল (৩৭), মাছুমসহ (৩৪) ৩৬ জন বাংলাদেশি কর্মী, দালাল মারফতে মালয়েশিয়ার জংথিয়ান এআরডিসি এসডিএন বিএইচডি কোম্পানিতে যান। রাজধানী কুয়ালালামপুরের বুকিতজলিল এলাকায় কোম্পানির প্রজেক্টে কাজ করছেন তারা প্রথমে দুই এক মাসের বেতন পেলেও ৫ মাসের বেতন পাননি এখনো। কোম্পানি মানছে না লেবার আইন। বেতন চাইতে গেলেই মালিক পক্ষ দেই দিচ্ছি বলে সময় পার করছে। গত ৫ মাসে ৩৬ জনের কেউই বাড়িতে পরিবারকে টাকা পাঠাতে পারেননি এমনকি তাদের কাছে হাত খরচের টাকাও নেই। কর্মীরা বলছেন, চলতি বছরের ১৯ জুলাই ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে। কোনো উপায়ন্তর খুঁজে না পেয়ে ২৪ মে সকালে ৩৬ জন কর্মী মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনে কোম্পানির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই দিনই ৩৬ জন কর্মীকে হাইকমিশনে বসিয়ে রেখে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসানের নির্দেশে তাৎক্ষণিক মালিক পক্ষকে ডেকে আনা হয়। কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার লুহ সুই লিনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রথম সচিব (শ্রম) এএসএম জাহিদুর রহমান। দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টার আলোচনায় কোম্পানিপক্ষ ৩৬ জন কর্মীর বকেয়া বেতন আগামী জুন ও জুলাই মাসে পরিশোধ করবে বলে উপস্থিত কর্মীদের সামনে হাইকমিশনকে আশ্বাস দেয়। আলোচনার পর ৩৬ জন কর্মীর বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথম সচিব (শ্রম) এএসএম জাহিদুর রহমান এই প্রতিবেদককে জানান, কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। জুন এবং জুলাই মাসে ৩৬ জন কর্মীর বকেয়া বেতন পরিশোধ করবে এবং যত দ্রুত কর্মীদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও যদি কোনো কর্মী সমস্যায় থাকেন বা মালিকপক্ষের আচরণ সম্পর্কে হাইকমিশনকে অবিহিত করেন তাহলে হাইকমিশন দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবে বলেও জানা তিনি।