‘কী দেবেন আর কী নেবেন, নির্বাচনের আগেই পরিষ্কার করতে হবে’


বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় সংখ্যালঘু সুরক্ষা বিশেষ আইন প্রণয়নসহ সরকারের কোনো নির্বাচনী অঙ্গীকার এখনও পূরণ করা হয়নি। মনে রাখতে হবে, দেশের অন্তত ১০০ আসনে নির্বাচনী ফলাফলের নিয়ামক শক্তি সংখ্যালঘুরাই। তাই কী দেবেন আর কী নেবেন- তার হিসাব-নিকাশ আগামী নির্বাচনের আগেই পরিষ্কার করতে হবে। তা না হলে নির্বাচনের মাঠে নামা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। শনিবার রাজধানীর তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ঢাকা মহানগর উত্তরের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রানা দাশগুপ্ত এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তত বাড়ছে। কারণ নির্বাচনের পূর্বাপর সময়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সাম্প্রতিক সময়ে নিয়মে পরিণত হয়েছে। রানা দাশগুপ্ত বলেন, আমরা ভারতের দালাল নই, আওয়ামী লীগেরও দালাল নই। আমরা কোনো রাজনৈতিক শক্তির দালাল নই। আমরা বাংলাদেশের দালাল। তিনি আরও বলেন, মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’- এ আদর্শকে ধারণ করে এ দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাই সবচেয়ে বেশি জীবন ও রক্ত দিয়ে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়ে বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ত্যাগ স্বীকার করলাম, স্বাধীনতার অর্ধশতক পর এসে আমরা দেখছি- এই রাষ্ট্রে স্বাধীনতার সেই তিন লক্ষ্যই হারিয়ে গেছে। রাষ্ট্র হয়ে গেছে বৈষম্যমূলক আর সাম্প্রদায়িক। ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাহাত্তরের সংবিধান হারিয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আজ এই রাষ্ট্রে পরাজিত। রাষ্ট্রধর্ম প্রবর্তনের মাধ্যমে আমাদের আজ এই রাষ্ট্রে সংখ্যালঘুতে পরিণত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে হিন্দুশূন্য করার রাজনৈতিক নীলনকশা চলছে। এই দেশ থেকে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী যদি হারিয়ে যায় তাহলে বাংলাদেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে। ঐক্য পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অতুল চন্দ্র মণ্ডলের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হৃদয় গুপ্তের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার রায়, অধ্যক্ষ হরিচাঁদ মণ্ডল সুমন, অ্যাডভোকেট কিশোর রঞ্জন মণ্ডল, রবীন্দ্রনাথ বসু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাপ্পাদিত্য বসু, মহানগর উত্তরের নেতা পরিমল কুরি, প্রভাষ মণ্ডল, অবিনাশ সমাজপতি, সুধীর বিশ্বাস প্রমুখ।