মরক্কোয় ভূমিকম্পে একসঙ্গে ৩২ শিক্ষার্থীর মৃত্যু


এক সপ্তাহ আগে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মরক্কো। তখন মারাকেশ শহরে ছিলেন স্কুলশিক্ষক নাসরিন আল-ফাদেল। ভূমিকম্প হওয়ার পরপরই নাসরিনের মাথায় আসে স্কুলের শিশুশিক্ষার্থীদের কথা। কারণ, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের অদূরেই ছিল তার স্কুল। ভূমিকম্পের পরপরই আদাসিল গ্রামে ছুটে যান আরবি ও ফরাসি ভাষার শিক্ষক নাসরিন। গিয়ে মাঝবয়সী এ নারী জানতে পারেন, ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী তার ৩২ শিক্ষার্থীর সবাই মারা গেছে। গ্রামের সেদিনের পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে নাসরিন বলেন, ভূমিকম্পের পরই ছুটে গেলাম গ্রামে। সবার কাছে আমার বাচ্চাগুলোর ব্যাপারে জানতে চাই, সৌম্য কোথায়? ইউসুফ কোথায়? কোথায় আমার মেয়ে আর ছেলেগুলো? এর কয়েক ঘণ্টা পর উত্তর আসে, তাদের কেউই নাকি বেঁচে নেই। নাসরিনের শিক্ষার্থীদের একজন খাদিজা। ভূমিকম্পে কীভাবে তার মৃত্যু হয়, স্বজনদের কাছে এ সম্পর্কে জানতে পারেন নাসরিন। তিনি বলেন, খাদিজাকে আমি অনেক পছন্দ করতাম। দারুণ চটপটে একটা মেয়ে ছিল সে। গান গাইতে খুবই ভালোবাসত। মাঝেমধ্যে আমার বাড়িতে আসত। একসঙ্গে ৩২ শিক্ষার্থীকে হারিয়ে মুষড়ে পড়েছেন নাসরিন। বললেন, গত শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে আমি শেষবার তাদের ক্লাস নিই। এর ঠিক পাঁচ ঘণ্টা পরই ভূমিকম্প আঘাত হানে। শুধু কল্পনায় ভাসছে, উপস্থিতির খাতাটি হাতে দাঁড়িয়ে একে একে ৩২ শিক্ষার্থীর নাম ধরে ডাকছি। ৮ সেপ্টেম্বর মরক্কোয় আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৩ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। ভূমিকম্পে মারাকেশের দক্ষিণে যেসব গ্রাম একেবারে ধ্বংস হয়েছে, সেগুলোরই একটি আদাসিল।