যুদ্ধ ও ভালোবাসার আখ্যান


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাহ্নবী কাপুরের পোস্ট করা ছবি অনেকেরই হৃদয় ঘায়েল করেছে। এর সুবাদে ‘স্নিগ্ধ’, ‘অপূর্ব’, ‘মায়াময়ী’, ‘অগ্নিকন্যা’, ‘আকর্ষণীয়’– এমন অনেক খেতাবও জুটেছে অনুরাগীদের কাছে। তারপরও গ্ল্যামার তারকা নয়, নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন লালন করেন জাহ্নবী। বলিউডের প্রথম সুপারস্টার অভিনেত্রী শ্রীদেবীর সুযোগ্য এই কন্যা সে কথা গণমাধ্যমেও বলেছেন একাধিকবার। যে কারণে গ্ল্যামার অভিনেত্রীর খোলস থেকে বেরিয়ে ভিন্ন সব চরিত্রে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। ‘গুঞ্জন সাপেনা: দ্য কারগিল গার্ল’, ‘রুহি’, ‘গুডলাক জেরি’, ‘মিলি’ ছবি তার অন্যতম উদাহরণ। আরও একবার এই বলিউড তারকাকে নতুন এক চরিত্রে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শক। চলতি মাসের ২১ তারিখ মুক্তি পাচ্ছে তাঁর নতুন ছবি ‘বাওয়াল’। যেখানে প্রথমবারের মতো জাহ্নবীর বিপরীতে দেখা যাবে জনপ্রিয় অভিনেতা বরুণ ধাওয়ানকে, যিনি ছবিতে অভিনয় করেছেন অজয় দীক্ষিত নামের একজন ইতিহাসের শিক্ষকের চরিত্রে। জাহ্নবী থাকছেন তাঁর স্ত্রীর ভূমিকায়। ছবির কাহিনিতে দেখা যাবে একটি হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন অজয়। সবার কাছে যিনি অজ্জু ভাইয়া নামে পরিচিত। নিজ শহরে তিনি একজন ছোটখাটো সেলিব্রেটি। সেটি সৃজনশীল কোনো কাজের জন্য নয়, লোকসমাজে নিজের সম্পর্কে একটি মিথ্যা ইমেজ তৈরির জন্য। সবকিছু মিলিয়ে জীবনটা তাঁর ভালোই কাটছিল। জীবন পরিক্রমা যে হঠাৎ বদলে যাবে তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। এটি সেই সময়ের কথা, যখন ইউরোপে বেড়ে চলেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা। অজয়কে বাধ্য করা হয় বিশ্বযুদ্ধে যাওয়ার জন্য। সে জন্য নববিবাহিত এই তরুণ অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্ত্রী নিশাকে নিয়ে যাত্রা করেন ইউরোপের পথে। সেখানে প্রশ্ন ওঠে তাদের বিয়ে নিয়ে। এ পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধের মাঝেই আরেক যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয় অজয় ও নিশাকে। যুদ্ধ ও ভালোবাসার এমন এক আখ্যান তুলে ধরা হয়েছে ‘বাওয়াল’ ছবিতে। প্রযোজক সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার কথায়, ‘বাওয়াল ভারতীয় নয়, একে আন্তর্জাতিক ছবি বলতে চাই আমরা। কাহিনি, নির্মাণ, শিল্পীদের অভিনয়– সবকিছু মিলিয়ে এমন দাবি করতেই পারি। এ কারণে ছবিটি একসঙ্গে ২০০টি দেশে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।’ শুধু প্রযোজক ও নির্মাতা নন, ছবির কলাকুলশীরাও ‘বাওয়াল’ সময়ের চাহিদাসম্পন্ন ছবি বলে মনে করেন। অভিনেতা বরুণ ধাওয়ান, যিনি এ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র জয় দীক্ষিতকে পর্দায় তুলে ধরেছেন– তাঁর কথায়, এটি অভিনয় ক্যারিয়ারের ভিন্ন স্বাদের একটি ছবি। যেখানে তাঁকে নতুনভাবে দর্শক আবিষ্কার করার সুযোগ পাবেন। একই মত অভিনেত্রী জাহ্নবী কাপুরেরও। তিনি বলেন, ‘গুঞ্জন সাপেনা: দ্য কারগিল গার্ল ও মিলি ছবিতে নামভূমিকায় অভিনয় করে একটা বিষয় অনুধাবন করেছি, দর্শক ভিন্ন স্বাদের গল্পের জন্যই সিনেমা হলে ভিড় জমান। তারকাদের গ্ল্যামার সেখানে মুখ্য হয়ে ওঠে না। সে কারণেই অভিনয়ে নিজেকে ভেঙে প্রতিনিয়ত নতুনভাবে পর্দায় তুলে ধরার চেষ্টা করছি। বাওয়াল এমন এক ছবি, যেখানে চরিত্রের ভেতরের মানুষটিকে দর্শক আলাদাভাবে আবিষ্কার করতে পারবেন। গল্প আর চরিত্রগুলো তাদের মনে ছাপ ফেলবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’