রোগীদের বন্ধু হয়েই থাকব


তাই কি চেয়েছিলেন- চিকিৎসকজীবন থেকে মন্ত্রীত্ব? ‘জীবনে কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি, মন্ত্রী হব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা- আমার কাছে শিরোধার্য। জীবনে কখনও রাজনীতি করিনি। তবে বঙ্গবন্ধুর আদর-স্নেহ আমি পেয়েছি। সরাসরি তার নির্দেশনাতেই বার্ন চিকিৎসা শুরু করি। তার (বঙ্গবন্ধু) পরিবারেরই যেন একজন সদস্য ছিলাম আমি। শেখ কামাল ছিল আমার প্রিয় বন্ধু’। নতুন মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে বঙ্গভবনে যাওয়ার আগ মুহূর্তে (বৃহস্পতিবার বিকাল) সঙ্গে কথা বলেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক প্রফেসর ডা. সামন্ত লাল সেন। দেশেই রয়ে গেলেন? ‘জীবনে অনেক সুযোগ পেয়েছি বিদেশে থিতু হওয়ার। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সেই নির্দেশনা মেনে আর দেশের মানুষের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে দেশেই মানুষের সেবায় প্রাণ সঁপে দিয়েছি। আমার পরিবারের প্রায় সবাই দেশের বাহিরে থাকেন। বিশ্বাস করুন, একদিনের জন্য তাদের (পরিবারের সদস্য) দেখতে গেলেও মনটা ছটফট করে- কখন দেশে চলে আসবো। চোখের সামনে ভাসতে থাকে পোড়া রোগীদের আর্তনাদ। রোগী, রোগীদের স্বজন আর চিকিৎসকদের মধ্যেই আমি আমার পরিবার খুঁজে পাই’। শিরোধার্য মানে? ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো আমার আস্থার জায়গা। তাঁর হাত ধরেই দেশে এগিয়ে যাচ্ছে পোড়া রোগের চিকিৎসা। শুধু সেটি নয়; স্বাস্থ্যসেবায় যে কোনো বিষয়েই যে কোনো মুহূর্তে তার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে কথা হয়, এমনকি দেখাও হয়। যা চেয়েছি তা পেয়েছি। তার দেওয়া দায়িত্বভার আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। তবে আমি যা আছি তাই-ই থাকব। পোড়া রোগীদের, সাধারণ মানুষের বন্ধু হয়েই থাকব’। কখন ফোন পেলেন? ‘মন্ত্রী পরিষদ থেকে যখন ফোন আসলো, বিশ্বাস করতে পারিনি। আমি ভেবেই নিয়েছি- হয়তো কেউ চিকিৎসার জন্য ফোন করেছেন। রোগীর বিষয়ে জানতে চাইবেন। এটাও ভেবেছিলাম যে, ভুয়া ফোন নাকি। ফোন যখন এসেছে- তখনও আমি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না, মন্ত্রী পরিষদ থেকে আমাকে মন্ত্রী হতে ফোন করেছেন’। রাজনীতি করেছেন? ‘না। তবে বঙ্গবন্ধু আমার পুরো জীবনাচারে আষ্টে-পৃষ্টে রয়েছেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার মধ্যেও বাবার সবগুণগুলো রয়েছে। তিনি দেশ-দেশের মানুষকে ভালোবাসেন। খুব কাছ থেকে দেখেছি- পোড়া রোগীদের জন্য কিভাবে কেঁদেছেন। রোগীদের স্বজনদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে-বার বার কেঁদে উঠছিলেন। বিশ্বে এমন মানবিক প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয়টি আছে কী- আমার জানা নেই। বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হয়ে কাজ করছি। ওটাই আমার কাছে বড় রাজনীতি। রাজনীতির পথ প্রদর্শন’। প্রফেসর ডা. সামন্ত লাল সেন- বৃহস্পতিবারও সারা দিন পোড়া রোগীদের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। বললেন, ‘ভাবছি, মন্ত্রী হওয়ার পর আমার পোড়া রোগীদের সেবায় যথাযথ সময় দিতে পারব তো। যাদের জন্য জীবনের সর্বোচ্চ সুযোগ হাত ছাড়া করলাম। দেশ ছেড়ে বিদেশ গেলাম না, তাদের ছাড়া বাঁচবো না। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটসহ সারা দেশে থাকা বার্ন ইউনিটগুলোতে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়া হচ্ছে। আরও কাজ বাকি রয়েছে। সুযোগ ও সহযোগিতা পেলে এ খাতে আরও উন্নয়ন হবে। আমি শত ভাগ বিশ্বাসী, প্রধানমন্ত্রীর কাছে যা চাইবো-তাই পাবো। পোড়া রোগীদের কল্যাণে যা যা প্রয়োজন, সবই প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাইবো। তিনি সবই খোঁজ রাখেন। আমরা শুধু চেয়ে নেব’।