শ্রেণিকক্ষে ছাত্রকে গুলি করা সেই শিক্ষক ৫ দিনের রিমান্ডে


সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে গুলি করা কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক রায়হান শরীফের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. বেলাল হোসেন তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশ সাতদিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করে। রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবির ওসি জুলহাজ উদ্দিন বিকেলে জানান, ‘আদালতের নির্দেশে রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ায় তাকে জেলা কারাগার থেকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হবে। তার ব্যবহৃত সকল ধরনের অবৈধ অস্ত্র, মাদক এবং কলেজের নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি ও হেনস্তার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ এ দিকে, ডা. রায়হান শরীফের ডাক্তারি সনদ ও নিবন্ধন বাতিল এবং চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরসহ তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অনড় কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করে ক্লাসে ফিরলেও দাবি পূরণ না হলে আবারও বিক্ষোভ করতে পারেন বলে কলেজের একাধিক সূত্রে জানা গেছে। কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, তদন্তের পর স্বাস্থ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষক রায়হানকে সাময়িক বরখাস্ত করায় আপাতত আন্দোলন ছেড়ে ক্লাসে ফিরছেন শিক্ষার্থীরা। তবে দাবির বিষয়ে তারা অনড়। প্রসঙ্গত, ডা. রায়হান শরীফ কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক। গত ৪ মার্চ বিকেলে ক্লাসরুমের ভেতর তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে তিনি গুলি করেন। ফরেনসিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের শিডিউল বহির্ভূত পাঠদান নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে তমালকে গুলি করেন শিক্ষক রায়হান। ওই ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত হন তিনি। চিকিৎসক রায়হানের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের রোষানল থেকে বাঁচাতে কলেজের ভেতর পুলিশ হেফাজতে রাখা হয় তাকে। পরে পুলিশ তাকে আটক করে। আটকের পর তার কাছ থেকে সেভেন পয়েন্ট ফাইভ সিক্স বোরের দুটি অবৈধ বিদেশি পিস্তল, ৮১টি গুলি, চারটি ম্যাগাজিন ও ১২টি বিদেশি চাকু জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্ত অস্ত্র আইনে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন তমালের বাবা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আবদুল্লাহ আল আমিন। তিনি বগুড়া উপজেলা সদরের ধানসিঁড়ি নাটাইল গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার পরে রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। পরে বিচারক বিল্লাল হোসেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠান।