ষান্মাসিক মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র ফেসবুকে শেয়ার দিলেই ব্যবস্থা


নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমিক স্তরে ষান্মাসিক (অর্ধবার্ষিক) প্রথম পরীক্ষার মূল্যায়ন বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। এদিন ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত চার শ্রেণির মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে শিক্ষার্থীরা আগের রাতে প্রশ্ন ও সমাধান দুটিই পেয়ে যায়। এ নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. মশিউজ্জামান (রুটিন দায়িত্ব) স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ৩ জুলাই থেকে দেশব্যাপী একসঙ্গে শুরু হয়েছে। নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র নৈপুণ্য অ্যাপের মাধ্যমে আগের রাতে প্রতিষ্ঠানপ্রধানের নিজস্ব আইডিতে পাঠানো হচ্ছে। কোনো কোনো শিক্ষক তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন, যা শিক্ষকতার নৈতিকতাবিরোধী কার্যক্রম এবং চরম অশিক্ষকসুলভ আচরণ। নৈপুণ্য অ্যাপ ট্র্যাকিং আওতায়। কোনো শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠানপ্রধান যদি এ ধরনের কার্যক্রম করেন, তাকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষকদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দিয়ে আরও বলা হয়, মূল্যায়ন কার্যক্রমের নির্দেশনাগুলো বিস্তারণের মতো এরকম স্পর্শকাতর একটি বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে এবং সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এতে আরও বলা হয়, যদিও এ ‘মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো’ কোনো শিক্ষার্থী আগে থেকে জেনে গেলেও সামগ্রিক মূল্যায়ন কার্যক্রমে কোনো ধরনের বিঘœ সৃষ্টি হবে না, তারপরও পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগেই এ ‘মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো’ কতিপয় প্রতিষ্ঠানপ্রধান বিভিন্ন মহলের সঙ্গে শেয়ার করলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি এবং সংস্থা এ ‘মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো’ বিভিন্ন অসত্য, ভুল, অপ্রাসঙ্গিক ও বিভ্রান্তিকর সমাধান ইউটিউব এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। এ বিভ্রান্তিকর সমাধান শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের ব্যাপকভাবে বিভ্রান্ত করছে এবং মূল্যায়ন কার্যক্রমে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। প্রতিষ্ঠানপ্রধান বা প্রধান শিক্ষকের নিজস্ব আইডিতে পাঠানো নির্দেশিকাগুলো বাইরের যে কারও সঙ্গে শেয়ার করা শিক্ষকতার নৈতিকতাবিরোধী কার্যক্রম ও চরম অশিক্ষকসুলভ আচরণ। প্রসঙ্গত, দুই বছর ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সোমবার (১ জুলাই) জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এ নির্দেশিকা বা প্রশ্নের ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মূল্যায়নের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই নতুন পদ্ধতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি নতুন হওয়ায় এনসিটিবি থেকে মূল্যায়নে শিক্ষার্থী নির্দেশিকা বা প্রশ্ন তৈরি করে তা পরীক্ষার আগের দিন প্রতিষ্ঠানপ্রধানের কাছে অনলাইনে পাঠানো হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা প্রশ্নপত্র ডাউনলোডের পর ফটোকপি করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরবরাহের ব্যবস্থা করছেন। এছাড়া প্রতিটি বিষয় মূল্যায়নে সাতটি পর্যায় বা স্কেল রয়েছে। মূল্যায়নের পর্যায়গুলো হলো অনন্য, অর্জনমুখী, অগ্রগামী, সক্রিয়, অনুসন্ধানী, বিকাশমান ও প্রারম্ভিক। সবচেয়ে যে ভালো করবে, সে ‘অনন্য’ পাবে। এভাবে অন্য পর্যায়গুলো দিয়েও মূল্যায়ন করা হবে।