সমর্থন নিয়ে দ্বন্দ্ব, বাবার বিরুদ্ধে মেয়ের সংবাদ সম্মেলন
অনলাইন নিউজ ডেক্স
কমলনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সমর্থন নিয়ে শ্বশুরের সঙ্গে মেয়ের জামাতার দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে একটি ‘সাজানো’ মামলা দিয়ে জামাতা মো. মহিনকে (৩২) জেলে পাঠান শ্বশুর আনল হক। আর জামাতার বাড়ি থেকে নিজের মেয়েকেও জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
এ ঘটনায় বাবা আনল হকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন মেয়ে জেসমিন আক্তার। বৃহস্পতিবার রাতে জেলা শহরের টাউন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেসমিন দাবি করেন, উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রার্থী সমর্থন নিয়ে তার বাবার সঙ্গে স্বামী মহিনসহ তার পরিবারের লোকজনের মনোমালিন্য দেখা দেয়। এর জেরে তার বাবা সাজানো মামলা দিয়ে তার স্বামী মহিনকে জেলে ঢুকিয়েছেন। মহিনের সঙ্গে আরও তিনজন কারাগারে রয়েছেন।
মামলার বাদী এবং বিবাদীরা জেলার কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের উত্তর চরমার্টিন গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
জানা গেছে, গত ৮ মে কমলনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বাদী আনল হক বিজয়ী চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহর (মোটরসাইকেল) পক্ষ নেন। আর তার জামাতা মহিন ও তার পরিবারের লোকজন পরাজিত প্রার্থী আহসান উল্যা হিরনের (আনারস) সমর্থন করেন।
আনল হকের মেয়ে জেসমিন আক্তার বলেন, আমার বাবা মোটরসাইকেলের ভোট করেন। আর আমার স্বামী মহিন ও আমার ভাশুর-দেবররা আনারস প্রতীকের ভোট করেন। এ নিয়ে আমার বাবার সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ভোটের দিন দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতিও হয়। এ নিয়ে বাবা আমার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৫ মে কমলনগর থানায় একটি সাজানো মামলা করেন। মামলায় আমার বাবা উল্লেখ করেন— ‘যৌতুকের জন্য আমার স্বামী আমাকে নির্যাতন করেছে এবং আমাকে বাপের বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না।’ বিষয়টি একেবারে মিথ্যা অভিযোগ।
তিনি আরও বলেন, স্বামী মহিন (৩২), ভাশুর মো. নাছির (৩৪), মো. মনির (৩৮) ও মো. খোকন এবং আত্মীয় সবুজ (২৮) ও মো. কালুকে (২৬) আসামি করে মামলা করেন বাবা। বিবাদীরা রোববার জামিন আবেদন করেন। পরে আদালত আসামি নাছির ও কালুর জামিন দিয়ে বাকিদের কারাগারে পাঠান।
জেসমিন বলেন, আমার বাবার মিথ্যা মামলায় আমার স্বামী ও ভাশুররা কারাভোগ করছেন। আমার বাবা এখন আমার সংসারও ভাঙতে চাচ্ছেন। তিনি চান আমি যেন আমার স্বামীকে তালাক দিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যাই। তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়েছে। কখনো আমার স্বামী আমাকে নির্যাতন করেনি। যৌতুকও দাবি করেনি। আমি আমার স্বামীর সংসার করতে চাই।
জানতে চাইলে আনল হক বলেন, দ্বন্দ্বের ঘটনা মিথ্যা। আমাকে আসামিরা মেরেছে। আমি রক্তাক্ত জখম হয়েছি। এ জন্য আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমার মেয়ে জেসমিন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। তারা মেয়েকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখে দিয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু ছিদ্দিক বলেন, আনল হক মামলায় যে ঘটনা উল্লেখ করেছেন তা সত্য নয়। নির্বাচন কেন্দ্র করেই কথা কাটাকাটি হয়। আনল হকের প্রার্থী বিজয়ী হওয়ায় তিনি এখন সাজানো ঘটনায় মামলা করেছেন। তিনি নিজের মেয়ের সংসারও ভাঙতে চান।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।