সরকার এখন কোনো গায়েবি মামলা দিচ্ছে না -ড. আসিফ নজরুল


অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে গায়েবি মামলা হতো। সরকারের পক্ষ থেকে গায়েবি মামলা দিত। আর এখন আমরা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা দিচ্ছি না। এখন মামলা হচ্ছে ব্যক্তিগতভাবে। ভুক্তভোগীরা মামলা দায়ের করছেন। তবে ঢালাও মামলা রুজুর প্রবণতা দেখা দিয়েছে। যা অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর। এ মন্তব্য করেছেন আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, আইনগতভাবে বিষয়টি কীভাবে সামাল (ট্যাকল) দেয়া যায়, এ বিষয়ে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি। আইন উপদেষ্টা বলেন, আসিফ নজরুল বলেন, দু’টি ব্যাপারে ওনাদের (বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) কাছে নির্দিষ্টভাবে সহায়তা চেয়েছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে গায়েবি মামলা হতো। সরকারের পক্ষ থেকে গায়েবি মামলা দিত। আর এখন আমরা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা দিচ্ছি না। সাধারণ লোকজন, ভুক্তভোগী লোকজন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, তারা অন্যদের ব্যাপারে ঢালাও মামলা দিচ্ছে। ঢালাও মামলার একটা খুব মারাত্মক প্রকোপ দেশে দেখা দিয়েছে। এটি আমাদের অত্যন্ত বিব্রত করে। আমরা অনেক ধরণের আইনি সংস্কারের কথা ভাবছি। আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছি। ওনাদের কাছে আমাদের একটা প্রত্যাশা যে ওনারা আইনগতভাবে কীভাবে বিষয়টি ট্যাকল (সামাল) করা যায়-পরামর্শ নিতে এসেছি। ওনারা পরামর্শ দেবেন, কাজ করে, রিসার্চ (গবেষণা) করে জানাবেন। ড. আসিফ নজরুল বলেন, নেক্সটে (পরবর্তী সময়ে) উচ্চ আদালতে যে বিচারক নিয়োগ হবে, সেটি আমরা একটা আইনের মাধ্যমে করতে চাচ্ছি। আইনের মাধ্যমে করার দাবি সমাজে বহুদিন যাবৎ আছে। ২০০৮ সালে এ রকম একটা আইন হয়েছিল। পরে তা আইনে রূপান্তরিত হয়নি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার এসে ওটাকে আইনে রূপান্তারিত করেনি। ওই আইনটা আরও বেশি যুগোপযোগী করার জন্য ওনাদের (বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সহায়তা চেয়েছি, যাতে নেক্সটে যে নিয়োগ হবে সেটি যাতে আমরা আইনের মধ্য দিয়ে করতে পারি। আইন উপদেষ্টা বৈঠক সম্পর্কে আরো বলেন, আলোচনায় কমিশনের কাজের অগ্রগতি কতটুকু-এটি জানতে চেয়েছি। ওনারা যেভাবে এগোচ্ছেন, আমি খুবই আশাবাদী।...ওনারা (বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) কিছু সমস্যার কথাও বলেছেন। ওনাদের যথেষ্ট সাপোর্ট (সহায়তা) দিতে পারছি না। প্রসঙ্গত: গত ৩ অক্টোবর ৮ সদস্যের ‘বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন’ গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিশনের প্রধান হচ্ছেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান। অন্য সদস্যরা হলেন, হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমদাদুল হক, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফরিদ আহমেদ শিবলী, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম ও মাসদার হোসেন, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী তানিম হোসেইন শাওন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন।