সাড়ে সাতশ ছাড়াল ডেঙ্গুতে মৃত্যু


এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধির ঊর্ধ্বমুখী ধারায় গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা সাড়ে সাতশ (৭৫২) ছাড়াল। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৯৫৬ জন। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৩০ হাজার ৪২০ জনে। অর্থাৎ এডিস মশার কামড়ে অসুস্থ হয়ে দৈনিক গড়ে দুই হাজার ৫৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে দুই হাজার ৯৫৬ জন ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৯১১ জন ও ঢাকার বাইরের দুই হাজার ৪৫ জন। একই সময়ে মৃত ১১ জনের মধ্যে তিনজন ঢাকার ও আটজন ঢাকার বাইরের। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক লাখ ৫৪ হাজার ২২৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৮ হাজার ৯৩৭ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৮৫ হাজার ২৯১ জন। বছরের একই সময়ে আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক লাখ ৪৩ হাজার ৪৬১ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৬৪ হাজার ১৪৮ জন এবং ঢাকার বাইরের ৭৯ হাজার ২৭৭ জন। এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুনে পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। জুলাইয়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮৫৪ জনে। আগস্টে বেড়ে তা ৭১ হাজার ৯৭৬ জন। সেপ্টেম্বরের প্রথম ১২ দিনের হিসাবে ৩০ হাজার ৪২০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মাসের হিসাবে জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন, জুনে পাঁচ হাজার ৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃত্যুর হিসাবে জুনে সারা দেশে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়। জুলাইয়ে এক লাফে ২০৪ জন এবং আগস্টে ৩৪২ জনে ওঠে। এর আগে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন এবং মে মাসে দুজনের মৃত্যু হয়। এ বছর এডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা যায়, তা থেকে ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন। এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যান। যা এর আগে এক বছরে সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল। সরকারি হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের।