স্বাভাবিক জীবনে না ফিরলে ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
অনলাইন নিউজ ডেক্স
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যে কোনো মূল্যে অপরাধীদের দমন করব। আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে না আসা চরমপন্থি-জলদস্যু কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যারা আত্মসমর্পণ করেছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। তারা যাতে পুনরায় দস্যুবৃত্তিতে না জড়ায়, সেজন্য তদারকি করা হবে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার ১২টি বাহিনীর ৫০ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের মধ্যে ৪৯ জন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের মধ্যে ৩ জন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত জলদস্যু। তারা ৯০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বেশকিছু গোলাবারুদ জমা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার ১২টি বাহিনীর ৫০ জলদস্যু অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করার এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা র্যাব-৭-এর এলিট হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে ৫০ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেন।
র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে ‘জলদস্যুবাহিনীর আত্মসমর্পণ’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ-সদস্য এম আব্দুল লতিফ, আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, র্যাবের ডিজি এম খুরশীদ হোসেন, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম ও চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা। আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের মধ্য থেকে বক্তব্য দেন মাহমুদ করিম ও জসীম উদ্দীন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জলদস্যুতা আপনাদের জীবনে কখনো শান্তি ফিরিয়ে আনবে না। অপরাধ করলে কখনো শান্তি পাওয়া যায় না। আজ যারা আত্মসমর্পণ করছে, তারা যেন অপরাধ করার চিন্তাও না করে, সে কাজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করছে। আমরা কাউকে ক্ষমা প্রদর্শন করব না। যারা এ পেশা ত্যাগ করবেন না, তারা কী দুঃসংবাদ লিখে নিয়ে যাবেন, সেটা মহান আল্লাহ জানেন। জন্মলগ্ন থেকে সন্ত্রাস নির্মূল করতে গিয়ে র্যাবের ৩৩ জন সদস্য জীবন দিয়েছেন। হাজার হাজার র্যাব সদস্য আহত হয়েছেন। অনেকের অঙ্গহানিও হয়েছে। জনগণের কাছে র্যাব একটি আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। সুন্দরবনে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনরক্ষায় ২০১২ সালে র্যাবকে টাস্কফোর্স হিসাবে দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। র্যাবের দুঃসাহসিক অভিযানে সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে একজন নারী জলদস্যুও রয়েছেন। তারা কখনো অত্যাচারিত বা নিপীড়িত হয়ে বাধ্য হয়েই এসব কাজে জড়িয়ে থাকেন। স্থানীয় প্রভাবশালী লোকেরাও তাদের বাধ্য করেন এসব কাজে জড়াতে। তিনি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের সিকিউরিটির জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। ওসব এলাকায় জলদস্যুরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। সুন্দরবনের জলদস্যুদের ভালো অবস্থা দেখে আজ তারা উদ্বুদ্ধ। সাংবাদিকদের সহযোগিতায় এ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই। আর যারা ফিরে আসেননি, তাদেরও ফিরে আসার আহ্বান জানাই।
জলদস্যুরা ৩৫টি একনলা বন্দুক, ১৮টি এসবিবিএল, ১৭টি ওয়ান শুটার গান, ১টি দুইনলা বন্দুক, ১টি পিস্তল, ১টি রিভলভার, ৩টি বিদেশি পিস্তল, ১টি এসএমজি ও ২টি এয়ারগানসহ ৯০টি অস্ত্র এবং চারটি ওয়াকিটকি জমা দিয়েছেন। এছাড়াও গুলি ও কার্তুজ জমা দিয়েছেন ২৮৩ রাউন্ড।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।