হারাম জীবিকায় রোজা হয় সওয়াবহীন
অনলাইন নিউজ ডেক্স
জীবন ধারণের জন্য মানুষকে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে হালাল ও হারাম সম্পর্কে অবগত থাকা আবশ্যক, যেন হালালকে হারাম থেকে পার্থক্য করে হালালকে গ্রহণ আর হারামকে বর্জন করা যায়। জীবিকার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জীবিকায় হারামের সংস্পর্শ থাকলে কিংবা হারাম লেনদেনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকলে রোজাসহ কোনো ইবাদতই ফলদায়ক হবে না।
এজন্য হালাল জীবিকার উপায় অবলম্বন করা ওয়াজিব। হারামপন্থায় উপার্জিত সম্পদ থেকে জীবনযাপন করলে নামাজ-রোজাসহ কোনো ইবাদতের সওয়াব হয় না। হারাম উপার্জন একজন মুসলমানের দুনিয়ার জীবনকে কলুষিত করে এবং পরকালীন জীবনের জন্য শাস্তি বয়ে আনে। দুনিয়ার জীবনকে কলুষমুক্ত, ইবাদতের সওয়াব অর্জন এবং পরকালীন জীবনে আল্লাহর শাস্তি থেকে বেঁচে জান্নাতে যাওয়ার জন্য হালাল উপার্জনের বিকল্প নেই।
আল্লাহতায়ালা বলেন, হে মানবজাতি, তোমরা পৃথিবীতে হালাল ও পবিত্র বস্তু ভক্ষণ করো। শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। -সুরা বাকারা : ১৬৮
আল্লাহতায়ালা নিজে পবিত্র। তিনি পবিত্র ছাড়া কোনো কিছু গ্রহণ করেন না। যাদের উপার্জনের পুরোটা হারাম কিংবা হালালের সঙ্গে হারামের ইষৎ সংমিশ্রণ রয়েছে তাদের খাওয়া-দাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ সবকিছুতেই হারাম অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। সবকিছুতে হারামের এই অন্তর্ভুক্তির কারণে শরীরের রক্ত মাংসেও হারাম মিশে যায়। হারামের সংমিশ্রণে কলুষযুক্ত এমন বান্দার নামাজ-রোজাসহ অন্যান্য ইবাদত পবিত্র সত্তা মহান আল্লাহ কীভাবে গ্রহণ করবেন?
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সা. বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র। তিনি শুধু পবিত্র বস্তুই গ্রহণ করেন। তিনি মুমিনদের সেই আদেশই দিয়েছেন, যে আদেশ দিয়েছিলেন রাসুলগণকে। আল্লাহ বলেন : হে ইমানদারগণ, তোমরা পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো। যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুজি হিসেবে দান করেছি। অতঃপর রাসুল সা. এমন এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন, যে ব্যক্তি দীর্ঘ সফরে থাকা অবস্থায় এলোমেলো চুল নিয়ে ধূলি ধুসরিত হয়ে ক্লান্ত-শ্রান্ত শরীরে আকাশের দিকে তাকিয়ে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে প্রার্থনা করে ডাকে : হে আমার প্রভু! হে আমার প্রভু! অথচ সে যা খায় তা হারাম। যা পান করে তা হারাম। যা পরিধান করে তা হারাম। হারামের দ্বারা সে পুষ্টি অর্জন করে। তার প্রার্থনা কীভাবে কবুল হবে? -সহিহ মুসলিম : ২০১৫
মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে জান্নাতে যাওয়ার জন্য খুব বেশি আমলের প্রয়োজন নেই। বরং কারো উপার্জন ও লেনদেনে যদি হারামের কোনো সংমিশ্রণ না থাকে তাহলে মহান আল্লাহ ও রাসুল সা. এর বিধি-নিষেধ মেনে একনিষ্ঠভাবে অল্প আমল করলেই আল্লাহ জান্নাত দান করবেন।
কারো উপার্জনে যদি হারামের সংমিশ্রণ থাকে তাহলে অনেক আমলও পরকালে কোনো কাজে আসবে না। তাই হালাল উপার্জনের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে সবচেয়ে বেশি। আমাদের মত মিশ্র অর্থনীতির দেশগুলোতে হালালকে হারাম থেকে পৃথক করার জন্য সবসময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আর নয়ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও হারামের সংমিশ্রণ হয়ে যাবে, যা পরকালের জীবনকে নষ্ট করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।